তিন বছর হাসপাতালের কাজে অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু ওই তিন বছর বেতন পেয়েছেন। দিল্লির জিবি পন্থ হাসপাতালের জৈব-রসায়ন বিভাগের সেই প্রাক্তন প্রধানকে নোটিস পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ওই চিকিৎসকের সমাজমাধ্যমের প্রোফাইল বলছে, তিনি কানাডায় ছবি তৈরি করেন।
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানিয়েছে, গত ২৮ জুলাই চিকিৎসক মঞ্জু সাবরওয়ালকে নোটিস পাঠায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সরকারি কর্মী হিসাবে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন তিনি। তার পরেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় মঞ্জুর কাছে। অনুমোদন ছাড়া কাজে যে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি, সেই বিষয়টিকে কেন বিরতি হিসাবে দেখা হবে না এবং ওই সময়ে তিনি যে বেতন ও ভাতা পেয়েছেন, তা কেন ফেরত চাওয়া হবে না, সেই প্রশ্নও করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
হাসপাতাল এই নিয়ে একটি চার্জশিট জমা করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে। তারা জানিয়েছে, এক মাস আগে মঞ্জুকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকেও সরানো হয়েছে। দিল্লির এই জিবি পন্থ হাসপাতাল সরকারি। তার জৈব-রসায়ন বিভাগের প্রধান গবেষণাগারের দায়িত্বে থাকেন মূলত। হাসপাতালের বাকি চিকিৎসকদের মতো সুযোগ-সুবিধা পান তিনি। নিয়ম অনুসারে, বছরে ১০ দিন অর্জিত ছুটি (আর্নড লিভ), ১০ দিন ক্যাসুয়াল লিভ, ৩০ দিনের টিচিং লিভ পেয়ে থাকেন মঞ্জু।
আরও পড়ুন:
স্নাতকোত্তর পাঠক্রমের জন্য মঞ্জুকে সর্বাধিক ৩৬ মাসের ছুটি দেওয়া যেতে পারে। তবে তার আগে চুক্তিতে সই করতে হয় চিকিৎসককে। সেই চুক্তি অনুসারে, ছুটি শেষে হাসপাতালে ফিরে অন্তত পাঁচ বছর চাকরি করতে হবে ওই চিকিৎসককে। তবে অনুমোদন ছাড়া কেউ ছুটি নিতে পারেন না, এমনটাই বলছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নীতি।
মঞ্জুর বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের সচিব নিখিল কুমার। সংবাদমাধ্যম মঞ্জুকে ইমেল করলে তিনি তার জবাব দেননি। সূত্র বলছে, মঞ্জুর বিরুদ্ধে গত মে মাসে অভিযোগ করেছিলেন ওই হাসপাতালের এক জন কর্মী। তিনি অভিযোগ করেন, ২০২২ সাল থেকে কানাডায় ছবি নির্মাণের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন মঞ্জু। সেই সঙ্গে হাসপাতালের বেতনও পাচ্ছেন। আরও অভিযোগ, মঞ্জুর হয়ে প্রয়োজনীয় নথিতে সই করতেন তাঁর কয়েক জন সহকর্মী। অভিযোগকারীর দাবি, হাসপাতালের ক্ষতি হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
মঞ্জুর সমাজমাধ্যমের প্রোফাইল থেকে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টরন্টোর একটি কলেজ থেকে ছবি নির্মাণের জন্য অনলাইনে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সিনেমাটোগ্রাফির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন সেখানেই।