পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের স্লিপার সেল তৈরির দায়িত্বে ছিলেন দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে অভিযুক্ত চিকিৎসক উমর-উন-নবি। তদন্তকারী সূত্রে খবর, উমরের ফোন ঘেঁটে এমনই তথ্য মিলেছে। ওই সূত্রের দাবি, মূলত উচ্চশিক্ষিত এবং যাঁদের অপরাধের কোনও রেকর্ড নেই, কেউ সন্দেহ করবেন না— এ রকম তরুণ-তরুণীদের খোঁজ চালিয়ে তাঁদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করতেন। তার পর সেই তরুণ-তরুণীর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে বন্ধুত্ব পাতাতেন উমর।
ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, উচ্চশিক্ষিত এবং অপরাধের কোনও রেকর্ড নেই এমন তরুণ-তরুণীদের কথার জালে ফাঁসিয়ে চলত মগজধোলাইয়ের কাজ। আর সে কাজ করতেন উমর নিজেই। তদন্তকারী ওই সূত্রের দাবি, গোটা বিষয়টিই পরিচালিত হত সমাজমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে। ওই তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ এবং কট্টরপন্থার বীজ বপনের কাজ চলত সুনিপুণ ভাবে। ওই সূত্রের দাবি, উমরের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, এমন বেশ কিছু সন্দেহভাজনের হদিস মিলেছে।
সূত্রের খবর, স্লিপার সেলে নিয়োগের জন্য মূলত জম্মু-কাশ্মীরের তরুণ-তরুণীদের বাছতেন। তবে সেই নিয়োগের কাজ শুধু জম্মু-কাশ্মীরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সেই জাল ছড়িয়েছে দেশের অন্য প্রান্তেও। হরিয়ানায় ‘ডক্টর টেরর মডিউল’-এর একের পর এক সদস্য গ্রেফতার হওয়ায়, সন্দেহ আরও বেড়েছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্র বলছে, জঙ্গিদলে নিয়োগের ধরন এবং কাদের জঙ্গিদলে নিয়োগ করা হবে, সেই কৌশলের আমূল পরিবর্তন ঘটেছে গত দু’দশকের তুলনায়। জঙ্গি সংগঠনের হ্যান্ডলারদের এখন নিশানা উচ্চশিক্ষিতেরা। পরিবারেরও কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই, এমন ছেলেমেয়েদেরও নিশানা করা হচ্ছে। দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা সকলেই চিকিৎসক। দেখা গিয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই অতীতে অপরাধের কোনও রেকর্ড নেই। তদন্তকারীদের এক সূত্র জানিয়েছে, চিকিৎসক আদিল রাথর, মুজফ্ফর রাথর, মুজ়াম্মিল গনাই— এঁদের অতীতে অপরাধের কোনও রেকর্ড ছিল না। এমনকি চিকিৎসক উমর নবিরও অতীতে ফৌজদারি অপরাধের কোনও রেকর্ড ছিল না। পুলিশ, গোয়েন্দা বা দেশের তদন্তকারী সংস্থাগুলির নজর যাতে সহজে এড়ানো যায়, তাই ‘হোয়াইট-কলার টেরর মডিউল’ তৈরি করার কাজ চলছিল।