আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাণিজ্য প্রসঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, আমেরিকান পণ্যে ভারত চড়া হারে শুল্ক নিয়ে থাকে। সেই কারণে ভারতের বাজারে ভাল করে বাণিজ্য করতে পারে না আমেরিকা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকায় গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন। তার পরেও ছবিটা বদলায়নি। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে আবার শুল্ক নিয়ে ভারতকে কটাক্ষ করলেন ট্রাম্প। জানালেন, তিনি এসে ভারতের এত দিনের ‘কীর্তি’ ফাঁস করে দিয়েছেন। এ বার নয়াদিল্লি শুল্ক কমাতে বাধ্য হবে।
আমেরিকার পণ্যে শুল্কের পরিমাণ হ্রাস করতে রাজি হয়েছে ভারত, জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘‘ভারত আমাদের থেকে বিপুল পরিমাণ কর নেয়। আমরা তো ভারতে কিছু বিক্রিই করতে পারি না। তবে ওরা এখন শুল্ক কমাতে রাজি হয়েছে। কারণ, এত দিন ধরে ওরা যা করে এসেছে, সেই কীর্তি এখন কেউ ফাঁস করে দিয়েছি।’’
আরও পড়ুন:
শুধু ভারত নয়, শুল্কের প্রশ্নে একাধিক দেশের বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছেন ট্রাম্প। তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুরু করে চিন, ব্রাজ়িল কিংবা আমেরিকার প্রতিবেশী মেক্সিকো এবং কানাডা মার্কিন পণ্য থেকে বিপুল পরিমাণ শুল্ক আদায় করে। ভারতে শুল্কের পরিমাণ ১০০ শতাংশেরও বেশি। কোনও কোনও পণ্যের ক্ষেত্রে ২০০ শতাংশের কাছাকাছি শুল্ক নেয় নয়াদিল্লি। এই নীতিকে ‘অন্যায়’ বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প। আমেরিকার প্রতি বিভিন্ন দেশের এই শুল্কনীতির পাল্টা ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপের কথা জানিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ, যে যে দেশ আমেরিকার পণ্যে বেশি শুল্ক নেয়, সেই দেশগুলির উপর পাল্টা শুল্ক চাপাবে আমেরিকাও। এই ‘টিট ফর ট্যাট’ নীতি আগামী ২ এপ্রিল থেকে চালু করা হতে পারে। ভারতের উপরেও বাড়তি শুল্ক চাপাতে পারে আমেরিকা।
মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে বসেও ভারতের শুল্ক নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘ভারত যে পরিমাণ শুল্ক নেয়, তা খুব অন্যায়। আমি ওদের দোষ দিচ্ছি না। কিন্তু এ ভাবে বাণিজ্য করা কঠিন। ওদের শুল্কের জন্য ভারতে কিছু বিক্রি করা কঠিন।’’
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে মোট ১২ হাজার কোটি ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা) বাণিজ্য হয়েছে। তার মধ্যে ভারতে ৪,১০০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে আমেরিকা। ২০২৩ সালের তুলনায় বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৪,৫০০ কোটি ডলার (৩ লক্ষ ৯৮ হাজার কোটি টাকা)।