ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির খুব কাছে চলে এসেছে আমেরিকা। বুধবার এমনটাই জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই চুক্তি কবে হবে, তা সুনির্দিষ্ট ভাবে জানাননি তিনি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে এখনও এই বিষয়ে দর কষাকষি চলছে। তিনি ভারতকে চিঠি পাঠালেই চুক্তি হয়ে যাবে।
বুধবার হোয়াইট হাউসে বাহরিনের যুবরাজ এবং প্রধানমন্ত্রী সলমন বিন হামাদ আল খলিফার সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির বিষয়ে খুব কাছে চলে এসেছি।” পরে একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমরা বহু দুর্দান্ত দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করে ফেলেছি। আরও একটা দেশের সঙ্গে এটা (বাণিজ্যচুক্তি) হতে চলেছে। হতে পারে ভারতের সঙ্গে। আমি জানি না। তবে আমরা দর কষাকষি চালিয়ে যাচ্ছি।” একই সঙ্গে ট্রাম্পের সংযোজন, “আমরা বিভিন্ন দেশকে চিঠি পাঠিয়ে দারুণ সব চুক্তি করব। চিঠিতে বলা থাকবে যে, আপনাদের (আমেরিকায় রফতানি করা পণ্যের উপর) ৩০ শতাংশ, ২৫ শতাংশ, ৩৫ শতাংশ, ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। আমরা খুব সুন্দর কিছু চুক্তি ঘোষণা করব। তবে ভারতের উপর ঠিক কত শতাংশ শুল্ক চাপতে চলেছে, তা স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:
আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির বিষয়ে আরও এক দফা আলোচনা সারতে সে দেশে গিয়েছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের একটি প্রতিনিধিদল। সর্বশেষ যে তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে কৃষিজাত পণ্য-সহ কিছু ক্ষেত্রে ভারত-আমেরিকার মধ্যে দর কষাকষি চলছে। বাণিজ্যচুক্তির মাধ্যমে ট্রাম্প সংশ্লিষ্ট দেশগুলির অভ্যন্তরীণ বাজারে মার্কিন পণ্য পৌঁছে দিতে চান। বুধবার নিজেই সে কথা জানিয়েছেন তিনি। তবে কেন্দ্রের একটি সূত্রের দাবি, কৃষির মতো বেশ কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন পণ্যের অবাধ আমদানি চাইছে না সরকার।
ট্রাম্প এখনও পর্যন্ত যে দেশগুলিতে শুল্ক-চিঠি পাঠিয়েছেন, তাতে সর্বনিম্ন শুল্ক রয়েছে ২০ শতাংশ। সর্বোচ্চ রয়েছে ৫০ শতাংশ। শনিবারই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মেক্সিকোর উপর ৩০ শতাংশ করে শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেছেন তিনি। জুন মাসের শেষ পর্বে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলার পরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য ভারত। তবে কূটনৈতিক এবং বণিকমহলের একাংশের মতে চিনের মতো দ্রুত আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতায় পৌঁছোনো ভারতের পক্ষে কঠিন। কারণ, বিরল খনিজ থেকে বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের কাঁচামাল পর্যন্ত বহু ক্ষেত্রের চিনের উপর নির্ভরতা রয়েছে আমেরিকার। কিন্তু, নয়াদিল্লির সে সুবিধা নেই। এই পরিস্থিতিতে শুল্কের হার ২০ শতাংশের নীচে নামলে তা নয়াদিল্লির ‘বড় সাফল্য’ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।