Advertisement
E-Paper

দেখুন না, কী হয়! রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত থাকলে চাপানো হবে ‘আরও অনেক’ নিষেধাজ্ঞা! ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প

বুধবারই ভারতীয় পণ্যের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। মোট শুল্কের পরিমাণ এখন ৫০ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের উপর আরও শুল্ক চাপতে চলেছে কি না, তা নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে মার্কিন প্রশাসনের অন্দরে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ১৪:৪০
(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প।

(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র

নিজের অবস্থানে অনড় ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখলে ‘আরও অনেক’ নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন তিনি। বুধবারই ভারতীয় পণ্যের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। মোট শুল্কের পরিমাণ এখন ৫০ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের উপর আরও শুল্ক চাপতে চলেছে কি না, তা নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে মার্কিন প্রশাসনের অন্দরে।

ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরেই এই বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছিল নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে অনেক দেশই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে। তা হলে কেন বাড়তি শুল্ক আরোপের জন্য আমেরিকা ভারতকে বেছে নিচ্ছে, সেই প্রশ্ন তোলা হয় ওই বিবৃতিতে। বুধবার হোয়াইট হাউসে একই প্রশ্নের সম্মুখীন হন ট্রাম্প। সংবাদমাধ্যমের তরফে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, চিনের মতো দেশগুলি রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখলেও এ ক্ষেত্রে ভারতকে কেন পৃথক ভাবে দেখছে আমেরিকা? জবাবে ট্রাম্প বলেন, “মাত্র ৮ ঘণ্টা (ভারতের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর পর) হয়েছে। দেখুন না, কী হয়। আপনারা আরও অনেক নিষেধাজ্ঞা দেখতে পাবেন।” সে ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা কেবল ভারতের উপরেই চাপানো হবে, না কি রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য চিন বা অন্য দেশগুলির উপরেও কোপ পড়তে চলেছে, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

অন্য দিকে, চিনকে ‘অন্যায্য সুযোগ’ না-দেওয়ার দাবি উঠেছে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির অন্দরেই। দলের নেত্রী নিকি হ্যালে মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে লেখেন, “ভারতের রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা উচিত নয়। কিন্তু এটাও ঠিক, যে চিন রাশিয়া এবং ইরান থেকে সবচেয়ে বেশি তেল আমদানি করে, তারা ৯০ দিনের জন্য শুল্ক-ছাড় পেয়ে গেল। চিনকে কোনও সুযোগ দেওয়া যেমন উচিত নয়, তেমনই ভারতের মতো শক্তিশালী বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা ঠিক নয়।”

বুধবার ভারতের উপর শুল্কের নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। আগেই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল ভারতীয় পণ্যে। তা ৭ অগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। বুধবারের বাড়তি ২৫ শতাংশের ফলে আগামী ২৭ অগস্ট থেকে ভারতকে আমেরিকায় পণ্য রফতানি করতে হলে ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। এই ঘোষণার পর আমেরিকার আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্কের তালিকায় চলে এল ভারতের নাম। এ ছাড়া, ব্রাজ়িলের পণ্যের উপরেও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তেলের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। তেল আমদানি করা হচ্ছে রাশিয়া থেকে। এই কারণেই ভারতের উপর এই বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হল।

নয়াদিল্লি আগেই এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছিল। বলা হয়েছিল, জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক বাজারদরের কথা মাথায় রেখে ভারত তার বাণিজ্যনীতি নির্ধারণ করে থাকে। অর্থাৎ, বাজারে কে কত দাম নিচ্ছে, সেই বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি করে বলেই ভারত তা কিনে থাকে। কিন্তু আমেরিকার বক্তব্য, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনার ফলে সেই টাকা ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাতে কাজে লাগাচ্ছে মস্কো। যুদ্ধে অর্থসাহায্য হচ্ছে ভারতের দেওয়া টাকায়। বুধবার বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানিকে নিশানা করেছে আমেরিকা। আমরা এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছি। আমাদের আমদানি বাজারের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। অন্য অনেক দেশ জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে একই পদক্ষেপ করছে। তা সত্ত্বেও বাড়তি শুল্ক আরোপের জন্য আমেরিকা বেছে নিচ্ছে ভারতকে, যা দুর্ভাগ্যজনক। এই পদক্ষেপ অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অনর্থক। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে ভারত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’’

Donald Trump Russia US China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy