অহমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনায় আপনার ছেলে দোষী, এমনটা কেউ মনে করছে না। প্রয়াত পাইলট সুমিত সবরওয়ালের বৃদ্ধ পিতাকে এমনই জানাল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের তদন্তকারী সংস্থা এএআইবি-র প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানটি রানওয়ে ছাড়ার পরেই আচমকা জ্বালানির সুইচ বন্ধ করা হয়েছিল। বিষয়টি স্পষ্ট করার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুমিতের পিতা পুষ্করাজ সবরওয়াল।
শুক্রবার বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চের তরফে প্রয়াত পাইলটের পিতাকে বলা হয়, “ঘটনাটি ভীষণই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আপনার ছেলে দোষী, এমনটা মনে করছেন কেন? আপনার এমনটা মনে করা উচিত নয়।” বিচারপতি কান্তের সংযোজন, “ভারতের কেউ বিশ্বাস করে না যে, এখানে পাইলটদের কোনও গাফিলতি ছিল।”
প্রয়াত পাইলটের পিতা পুষ্করাজের আইনজীবী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর একটি প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ আদালতে উত্থাপিত করেন। ওই প্রতিবেদনে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে পাইলটদের ত্রুটির সম্ভাবনাই জোরালো বলে দাবি করা হয়। ওই প্রসঙ্গ উঠতেই বিচারপতি কান্ত বলেন, “আমরা বিদেশের প্রতিবেদন নিয়ে ভাবিত নই। আপনাকে (পাইলট সুমিতের পিতা পুষ্করাজ) কি বিদেশের আদালত সুরাহা দেবে? ওটা একটা কুৎসিত (ন্যাস্টি) প্রতিবেদন।”
পুষ্করাজের আইনজীবী জানান, ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর প্রতিবেদনে ভারত সরকারের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। তার পরেই শীর্ষ আদালত কেন্দ্র, ভারতের বেসরকারি বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ) এবং এএআইবি-কে নোটিস দিয়ে সংস্থা দু’টিকে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলেছে। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। পাইলটদের সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান পাইলটস’ বিমান দুর্ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে পৃথক আর্জি জানিয়েছে। সেটিরও শুনানি হবে সোমবার।
১২ জুন বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে অহমদাবাদ বিমানবন্দরের রানওয়ে ছেড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১। তার পর ঠিক ৩২ সেকেন্ডের মাথায় বিমানটি ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৪১ জনের। এআই১৭১ বিমানটিতে প্রধান ক্যাপ্টেন হিসাবে ছিলেন অভিজ্ঞ পাইলট, ৫৬ বছর বয়সি সুমিত। এ ছাড়া তাঁর সঙ্গে ফার্স্ট অফিসার হিসাবে ছিলেন কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্দর (৩২)।