Advertisement
২২ মে ২০২৪
BJP

নতুন মুখে সাফল্য কতটা, সংশয় দলে

কর্নাটকে প্রায় দু’দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এবং শেষ পর্বে লাগামছাড়া দুর্নীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া ছিল।

An image of BJP flag

প্রার্থী বদলে দেওয়ার যে নীতি নিয়ে বিজেপি এগোচ্ছে, আগামী দিনে তা কতটা প্রয়োগ করা উচিত, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে দলের মধ্যেই। ফাইল ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ০৬:৫৭
Share: Save:

প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার কারণে জয়ী প্রার্থীকে বদলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গুজরাতে কাজ দিলেও, ব্যর্থ হয়েছে হিমাচল প্রদেশ ও কর্নাটকে। দুই রাজ্যে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা অন্য দলে গিয়ে বা নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে বিজেপির জেতার সম্ভাবনা নষ্ট করে দিয়েছেন। ফলে প্রার্থী বদলে দেওয়ার যে নীতি নিয়ে বিজেপি এগোচ্ছে, আগামী দিনে তা কতটা প্রয়োগ করা উচিত— তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে দলের মধ্যেই।

কর্নাটকে প্রায় দু’দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এবং শেষ পর্বে লাগামছাড়া দুর্নীতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া ছিল। ছ’মাস আগে গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশের ভোটের আগেও একই চিত্র থাকায় প্রার্থী বদলের কৌশল নিয়েছিল বিজেপি। গুজরাতে সেই কৌশল খেটে যায়। সেখানে মোট ১৮২টি আসনের মধ্যে ৪৫ জন একেবারে নতুন প্রার্থী দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। তার মধ্যে ৪৩ জন নির্বাচনে জিতে যান। কিন্তু একই রণকৌশল নিলেও বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় হিমাচল প্রদেশ। সেই রাজ্যে যে ১৯ জন বিধায়ককে বিজেপি টিকিট দেয়নি, তাঁদের মধ্যে ১২ জন অন্য দলের টিকিটে জিতে আসেন। ফলে হিমাচলে বিজেপির জিতে আসার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।

এবার কর্নাটকেও প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার কথা মাথায় রেখে গুজরাতের মতো বড় সংখ্যায় প্রার্থী বদল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, হিমাচলের মতো এ ক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়েছে প্রার্থী বদলের কৌশল। পরিসংখ্যান বলছে, ২২৪ আসনের কর্নাটক বিধানসভায় এবার ১২১টি আসনে প্রার্থী বদল করেছে বিজেপি। এর মধ্যে ৭৫জনকে প্রথমবার বিধানসভার টিকিট দিয়েছিল দল। তাঁদের মধ্যে জিতেছেন মাত্র ১৪ জন। তুলনায় প্রথমবার লড়ে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছেন ৩৫ জন। তাছাড়া, কর্নাটকে একাধিক মন্ত্রী ও বিজেপি বিধায়ক টিকিট না পেয়ে অন্য দলে গিয়ে জিতে গিয়েছেন। যেমন, লিঙ্গায়েত নেতা তথা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী লক্ষণ সাদাভি বিজেপির টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। ভোটে জিতেছেন তিনি। আবার একাধিক কেন্দ্রে যোগ্য প্রার্থীকে টিকিট না দেওয়ায় ভুগতে হয়েছে বিজেপিকে। ম্যাঙ্গালোরের পুত্তুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রভাবশালী বিজেপি কর্মী অরুণ পুথিলা দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে ৬২ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। মাত্র চার হাজার ভোট বেশি পেয়ে জিতে গিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী।

কর্নাটকের প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখ হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের টিকিট দিয়ে আমজনতার মন জয়ের কৌশল নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ দল। অধিকাংশ আমলাই হেরেছেন। তবে দলের এক নেতার যুক্তি, ‘‘বিজেপি সব সময়েই নতুন ও তরুণ নেতাদের তুলে আনার পক্ষপাতী। প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, পুরনো প্রার্থীর অন্য দলে চলে যাওয়া, দলবদল না করলেও সমর্থকদের নিয়ে বসে যাওয়া ভোটের ফলে প্রভাব ফেলেছে। যে কারণে কর্নাটকে নতুন যাঁরা ভোটে লড়েছেন তাঁদের অনেকেই হেরে গিয়েছেন।’’ বিজেপি নেতাটির কথায়, ‘‘দলের বিপক্ষে হাওয়া। তাই কোনও সমীকরণ কাজ করেনি। কিন্তু বিজেপি মনে করে, তরুণদের তুলে আনার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে দলের লাভ হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Election new candidate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE