E-Paper

পুজোর গন্ধ আরব সাগর পারের নোনা বাতাসে

সাগর পারের নোনা বাতাসে ঢাকের বোল, উলুধ্বনি, ধূপকাঠির গন্ধ মিশিয়ে হাজির হয়েছে ‘বোম্বে দুর্গাবাড়ি সমিতি’।

প্রসূন সরকার

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৬
মুম্বইয়ে বাঙালিদের দুর্গাপুজোর অসংখ্য আয়োজন।

মুম্বইয়ে বাঙালিদের দুর্গাপুজোর অসংখ্য আয়োজন। নিজস্ব চিত্র ।

বাংলার শিকড়ে গাঁথা চারাগাছটি কখনও ভাবেনি, সুদূর আরব সাগরের পারে ছোট্ট একটি স্বপ্নকে আঁকড়ে সে মহীরূহ হয়ে উঠবে! স্বপ্নটা শরতের মরসুমে একটু টুকরো ‘কলকাতা’ গড়ে তোলার। সেই সাধ যে কেবল স্বপ্নের মোড়কেই আটকে থাকেনি তা জানান দিচ্ছে মুম্বইয়ে বাঙালিদের দুর্গাপুজোর অসংখ্য আয়োজন। বলিউড তারকাদের বাড়ির পুজো এ শহরের বড় আকর্ষণ। তবে বাঙালিয়ানায় তাদের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিচ্ছে অসংখ্য সোসাইটি এবং বারোয়ারি পুজো। এমনকি বাড়ির পুজোগুলিও।

সাগর পারের নোনা বাতাসে ঢাকের বোল, উলুধ্বনি, ধূপকাঠির গন্ধ মিশিয়ে হাজির হয়েছে ‘বোম্বে দুর্গাবাড়ি সমিতি’। ১৯৩০ সালে শুরু হওয়া এই পুজো এ বার ৯৬তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। কেবল দশভূজার আরাধনাই নয়, অসহায় শিশুদের শিক্ষা-সহায়তা, চিকিৎসার মতো নানা সামাজিক উদ্যোগে শামিল এই পুজো কমিটি। আবার মুম্বই থেকে ৪৩ কিলোমিটার দূরের পালাভার প্রবাসী বাঙালিদের সংগঠনটি খুদেদের মাতৃভাষায় ভাবতে শেখায়। পালাভা সিটির দুর্গাপুজো মানে কলকাতার বাইরেও এক ‘সিটি অফ জয়’। সঙ্গে থাকে বাংলা নাটক-গান, নৃত্যনাট্যের আসরও। থাকে ছৌ নাচের অনুষ্ঠান। বসে ‘আনন্দ পাবলিশার্স’এর স্টলও। এই নিয়ে ১১ বছরে পড়েছে পালাভা সিটির এই পুজো।

‘বোম্বে দুর্গাবাড়ি সমিতি’-র দুর্গা পুজো।

‘বোম্বে দুর্গাবাড়ি সমিতি’-র দুর্গা পুজো। নিজস্ব চিত্র।

পালাভার দে বাড়ির পুজো এ বার ষষ্ঠ বর্ষে পড়েছে। ২০২০ সালে এই পুজোর সূচনা। অতিমারির কঠিন সময়ে দুর্গার আরাধনায় মুক্তির পথ খুঁজেছিল দে পরিবার। পুজোর সূচনা ঘিরেও রয়েছে এক কাহিনি। কথা ছিল চণ্ডীপাঠের। কিন্তু ঠাকুরমশাই চণ্ডীপাঠে ‘ভুল’ করে উচ্চারণ করে ফেলেছিলেন দুর্গামন্ত্র। কে জানত, সেই ভুলই হয়ে উঠবে এক মঙ্গলময় সূচনা! দে বাড়ির পুজোর শিকড় জড়িয়ে বাংলাদেশের কুমিল্লার সঙ্গে।

মুম্বইয়ের অনুশক্তিনগরের তথা দেওনার বঙ্গীয় পরিষদের পুজো শুরু হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। ‘ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাটমিক এনার্জি’তে কর্মরত কিছু বাঙালির উদ্যোগে এর পথচলা শুরু। তার পর থেকে ঐতিহ্য মেনে প্রতি বছর হচ্ছে এই দুর্গোৎসব। এই বছর দেওনার বঙ্গীয় পরিষদের পুজো ৫১ বছরে পড়ল। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ অনুশক্তিনগরের এই পুজোয় মেতে ওঠেন। শারদোৎসবের প্রতিটি সন্ধ্যা মুখরিত হয় শিল্পীদের উপস্থাপনায়। বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে সারা বছর নানা কর্মসূচির আয়োজন করে পরিষদ। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের মেলবন্ধনের সুরকে আঁকড়েই এ বারের পুজো মধ্য মুম্বইয়ের পওয়াইয়ের ‘স্পন্দন ফাউন্ডেশন’-এর। প্রাচীন কাল থেকে হিন্দু সমাজ কী ভাবে মন্দির-কেন্দ্রিক শিক্ষাদানের মাধ্যমে শিক্ষিত হয়ে উঠেছে— সেই বার্তাও ফুটে উঠেছে প্যান্ডেল সজ্জায়।

সহ-প্রতিবেদন: সোমাশ্রী বক্সী, ভাস্কর সান্যাল

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2025 Mumbai

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy