E-Paper

ফেরার প্রতারকদের ফেরাতে সওয়াল

আর্থিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্কগুলির কাছে ঋণ খেলাপি একটা বড় সমস্যা। বিপুল ঋণ নিয়ে তা শোধ না করায় ব্যাঙ্কগুলির ‘নন পারফর্মিং অ্যাসেট’ বা আর্থিক ক্ষতি ক্রমশ বেড়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৫৩
narendra modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

আর্থিক প্রতারণা রোধ এবং ফেরার প্রতারকদের দেশে ফেরানোর দ্রুত প্রক্রিয়ার পক্ষে যৌথ পদক্ষেপের সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৯ থেকে ১২ অগস্ট পর্যন্ত কলকাতায় দুর্নীতি-বিরোধী রূপরেখা তৈরিতে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির আলোচনা হয়েছে। শনিবার সেই বৈঠকের শেষ দিনে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, আর্থিক অপরাধ, সেই অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়া এবং পলাতকদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে দ্রুত তাদের দেশের আইনের আওতায় আনার মতো পারস্পরিক উপযুক্ত সমন্বয় গড়ে তুলতে হবে। এমন অপরাধের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে যৌথ ভাবে।

আর্থিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্কগুলির কাছে ঋণ খেলাপি একটা বড় সমস্যা। বিপুল ঋণ নিয়ে তা শোধ না করায় ব্যাঙ্কগুলির ‘নন পারফর্মিং অ্যাসেট’ বা আর্থিক ক্ষতি ক্রমশ বেড়েছে। অভিযোগ উঠেছে নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীর মতো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। তাঁরা সেই ‘অপরাধ’ করে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়াও চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আর্থিক অপরাধ ঠেকানো, দেশ ছেড়ে পালানো রোখা বা বিদেশে আশ্রয় নেওয়া এমন অপরাধীদের দ্রুত ফেরানো সম্ভব হলে এমন অপরাধে কিছুটা রাশ টানা সম্ভব।

সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধীরা বিচারের পথ এড়াতে দেশের আইনি ও আর্থিক ব্যবস্থার ফাঁকগুলির সুযোগ নেয় এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। জি-২০ দুর্নীতি বিরোধী কর্মিগোষ্ঠী সম্পদ পুনরুদ্ধার এবং পারস্পরিক আইনি সহায়তার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। মিলিত লড়াই এবং অভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োজন। অডিট-পদ্ধতি শক্তপোক্ত করার সঙ্গে তিনটি সর্বোচ্চ স্তরের নীতিরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

এই অপরাধীরা যাতে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত কোন দেশে আশ্রয় না পায়, তা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী আইনি কাঠামো তৈরিতে পারস্পরিক সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে বৈঠকে। ‘ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএটিএফ)-এর সহযোগিতায় আর্থিক অপরাধীদের মোকাবিলায় অভিন্ন পদ্ধতি তৈরি, তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এক অভিন্ন মঞ্চ তৈরি এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের সম্পত্তি চিহ্নিত করার পদ্ধতি তৈরিতেও বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

এ দিন প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছন, দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ রোখার প্রশ্নে সরকার আপসহীন। স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধ পরিবেশ গড়ে তুলতে ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে প্রযুক্তির ব্যবহার করে বেহিসাবি খরচ রোখা গিয়েছে। সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সব মিলিয়ে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি ডলারের আর্থিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যেমন গিয়েছে, তেমনই বাঁচানো গিয়েছে প্রায় ৩৩০০ কোটি ডলার। মোদীর দাবি, ২০১৮ সালে আর্থিক অপরাধ সংক্রান্ত আইন পাশ করার পরে এখনও পর্যন্ত তেমন অপরাধী এবং পলাতকদের ১৮০ কোটি ডলার
মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে সরকার। ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং’ আইনের আওতায় ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ১২০০ কোটি ডলার মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

আর্থিক অপরাধের প্রভাব মহিলাদের উপরেও কী ভাবে পড়ছে, তা নিয়েও জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি আলোচনা করেছে। আগামী দিনে এ নিয়ে অভিন্ন কৌশল তৈরিও হবে বলে মনে করছে কেন্দ্র। এই দিক থেকে দরকারে তদন্তকারী সংস্থাগুলির কর্মপদ্ধতি সংশোধনের ব্যাপারেও ভাবনাচিন্তা করা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Narendra Modi Fraud money

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy