Advertisement
E-Paper

মেইতেই জঙ্গিগোষ্ঠী ‘চাঁদা’ তুলেছে মণিপুরের বিজেপি এবং কংগ্রেস বিধায়কদের থেকে! চার্জশিটে বলল ইডি

মেইতেই জঙ্গিগোষ্ঠী ইউএনএলএফ-এর আর্থিক তছরুপের তদন্তে ডিসেম্বরে দু’জনকে গ্রেফতার করে ইডি। ওই মামলায় একটি চার্জশিটও জমা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:১০
দীর্ঘ দিন ধরে অশান্ত মণিপুর। কুকি এবং মেইতেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে বার বার তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি।

দীর্ঘ দিন ধরে অশান্ত মণিপুর। কুকি এবং মেইতেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে বার বার তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। —ফাইল চিত্র।

মেইতেই জঙ্গিগোষ্ঠী ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (ইউএনএলএফ) ‘চাঁদা’র নামে ‘তোলাবাজি’ করেছে মণিপুরের রাজনীতিকদের উপর! সম্প্রতি এক আর্থিক তছরুপের মামলার চার্জশিটে এই দাবি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তালিকায় রয়েছেন মণিপুরের ছ’জন রাজনীতিক। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বিজেপির বিধায়কদের পাশাপাশি সে রাজ্যে বিজেপির সাধারণ সম্পাদকের নামও রয়েছে সেই তালিকায়। রয়েছেন কংগ্রেসের এক বিধায়ক।

‘দ্য প্রিন্ট’ অনুসারে, বিজেপি বিধায়ক মায়ংলামবাম রামেশ্বর সিংহ, ইয়ামনাম খেমচাঁদ সিংহ এবং কংখাম রবীন্দ্র সিংহ রয়েছেন তালিকায়। এ ছাড়া মণিপুর বিধানসভার অধ্যক্ষ থোকচম সত্যব্রত সিংহ, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জিএস প্রেমানন্দ মীতেই এবং কংগ্রেস বিধায়ক কেইশম মেঘচন্দ্র সিংহের থেকেও ইউএনএলএফ ‘চাঁদা’ তুলেছিল। রামেশ্বরের থেকে ৮ লক্ষ টাকা, খেমচাঁদের থেকে ৩ লক্ষ টাকা এবং মেঘচন্দ্রের থেকে ৫০ হাজার টাকা ওই গোষ্ঠী তুলেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। সত্যব্রত, রবীন্দ্র এবং প্রেমানন্দের কাছ থেকে তোলা হয়েছে ২ লক্ষ টাকা করে। এই ছয় রাজনীতিকের মধ্যে দু’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘দ্য প্রিন্ট’। তাঁরা অবশ্য এ ধরনের কোনও টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।

বস্তুত ১৯৬৪ সালে গঠিত হওয়া ইউএনএলএফ বর্তমানে ভারতে একটি ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন, যাদের লক্ষ্য ভারত থেকে মণিপুরকে আলাদা করা। মণিপুরে অশান্তি সংক্রান্ত একটি মামলার তদন্ত চালাচ্ছিল এনআইএ। ওই মামলায় আর্থিক বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে পৃথক তদন্ত শুরু করে ইডি। ওই মামলার তদন্তে ১৬ অক্টোবর থোকচম জ্ঞানেশর এবং লাইমায়ুম আনন্দ শর্মা নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে ইডি। গত ১২ ডিসেম্বর ওই মামলায় একটি চার্জশিটও জমা করে তদন্তকারী সংস্থা। পরে ১৮ ডিসেম্বর ই়ডির তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তদন্তকারী সংস্থা তাতে এই ‘চাঁদা’ তোলার বিষয়টি উল্লেখ করে। তবে কাদের থেকে টাকা তোলা হয়েছে , তা বিবৃতিতে জানায়নি তদন্তকারী সংস্থা।

ইডির বিবৃতি অনুসারে, সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে টাকা তুলত ইউএনএলএফ। তোলাবাজির সময়ে ভয় দেখানোর জন্য বেআইনি অস্ত্রশস্ত্রও ব্যবহার করা হত বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থাগুলির নজর এড়াতে নগদেই টাকা নিত জঙ্গিরা। চাঁদা চেয়ে চিঠি পাঠানো হত বিভিন্ন মানুষকে। এমন দু’টি চিঠি প্রাপকের নাম গোপন রেখে প্রকাশ্যেও এনেছে ইডি। ওই চিঠির প্রাপকের থেকে ১০ কোটি টাকা ‘চাঁদা’ চেয়েছিল জঙ্গি গোষ্ঠী। অপর এক জনের থেকে ২ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল।

ইডি সূত্রে পাওয়া তথ্যে ‘দ্য প্রিন্ট’ জানায়, তোলাবাজির শিকার হওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় থাকা বেশ কয়েক জন রাজনীতিকের নামও চার্জশিটে উল্লেখ করেছে ইডি। এ বিষয়ে মণিপুরের বিজেপি বিধায়ক খেমচাঁদের সঙ্গে ওই সংবাদমাধ্যম যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কী ভাবে তাঁর নাম এই তালিকায় এল, তা তিনি জানেন না। খেমচাঁদ বলেন, “এটি দুর্ভাগ্যজনক। আমি জানি না তালিকায় কত জনের নাম রয়েছে। তবে আমার সঙ্গে ইউএনএলএফের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি ওই সংগঠনের কারও সঙ্গে কোনও দিন দেখাও করিনি।” কংগ্রেস বিধায়ক মেঘচন্দ্রের আবার সন্দেহ, তাঁকে বদনাম করতেই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে তাঁর নাম তালিকায় প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেঘচন্দ্র বলেন, “তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকে বিজেপিতে থেকেও মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের বিরুদ্ধে কথা বলছিলেন। মনে হচ্ছে, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলছেন, তাঁদের বদনাম করার চেষ্টা চলছে।” বাকি চার রাজনীতিকের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করে ‘দ্য প্রিন্ট’। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Manipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy