মায়াবতী।—ফাইল চিত্র।
ক্ষমতায় থাকাকালীন রাজ্যজুড়ে মূর্তি বসিয়েছিলেন। সেই ঘটনায় এ বার বিপাকে বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) নেত্রী মায়াবতী। মূর্তি বসানোয় প্রায় ১৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছিল বলে ২০১৪ সালে এফআইআর দায়ের করে উত্তরপ্রদেশ ভিজিল্যান্স দফতর। তার ভিত্তিতে এ বার তদন্তে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনে অপরাধ মামলা দায়ের করেছে তারা। বৃহস্পতিবার মায়াবতী সরকারের মন্ত্রী-আমলার বাড়ি সমেত মোট সাত জায়গায় তল্লাশি চালানো হল।
এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে অবৈধ বালির খাদান মামলায় নাম জড়ায় উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি নেতা অখিলেশ যাদবের। তাঁর সরকারের বেশ কিছু মন্ত্রী-আমলাদের বাড়ি-সহ মোট ১৪টি জায়গায় হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। বলা হয়, ২০১২-১৪ সালের মধ্যে হারিমপুর জেলায় বেআইনিভাবে খননকার্য চালানো হয়েছে। তবে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেন অখিলেশ। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। মায়াবতীর সঙ্গে জোট গড়েছেন। তাই মোদী সরকার গোয়েন্দা লেলিয়ে ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। সেইসময় তাঁকে সমর্থন করেছিলেন মায়াবতী। তার পরই তাঁর সরকারের মন্ত্রী-আমলাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হলেন গোয়েন্দারা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়াবতীর সরকারে উত্তরপ্রদেশে নির্মাণ নিগমের দায়িত্বে ছিলেন সিপি সিংহ। এ দিন লখনউয়ে তাঁর বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তল্লাশি চালানো হয় নির্মাণকাজে যুক্ত আধিকারিক ও ঠিকাদারদের বাড়িতেও। বেশ কিছু প্রাক্তন আমলাও গোয়েন্দাদের সন্দেহ তালিকায় রয়েছে। খুব শীঘ্র তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: জাগো বাংলার তহবিলের খোঁজে এ বার হানা দিল সিবিআই, জেরা মমতার সচিবকে
আরও পড়ুন: নিশানায় বেকারত্ব রিপোর্ট! মোদীকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা রাহুলের, জবাবে ‘মুসোলিনি’ কটাক্ষ বিজেপির
মায়াবতী উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে লখনউ, নয়ডা-সহ বিভিন্ন এলাকায় অজস্র মূর্তি ও স্মৃতিসৌধ বসানো হয়। তাতে সামিল ছিল বসপা প্রতিষ্ঠাতা কাঁসিরামের মূর্তি এবং দলের প্রতীক চিহ্ন হাতি। বেশ কিছু পার্ক তৈরি হয় তাঁর আমলে।
ভিজিল্যান্স দফতরের দাবি, বসপা নেত্রীর ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন সরকারি আমলা, কিছু বেসরকারি সংস্থাকে অন্যায় ভাবে আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, মূর্তি তৈরির সামগ্রী কেনায় ব্যাপক দুর্নীতি করেছিলেন মায়াবতীর মন্ত্রিসভার দুই সদস্য নাসিমউদ্দিন সিদ্দিকি, বাবু সিংহ কুশওয়াহা, ১২ জন বিধায়ক-সহ প্রায় ২০০ জন। তার ফলে সরকারি রাজকোষের ক্ষতি হয় ১১১ কোটি ৪৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। নির্মাণকার্যে প্রয়োজনীয় পাথর ও অন্যান্য সামগ্রী কিনতে ৪ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। যার ৩৫ শতাংশই মন্ত্রী-আমলা, রাজনীতিক, ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারদের পকেটে ঢোকে।
আয় বহির্ভূত সম্পত্তি-সহ আরও বেশ কিছু মামলায় অভিযুক্ত নাসিমউদ্দিন। এই মুহূর্তে বসপার সঙ্গেও কোনও যোগ নেই তাঁর। বরং যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য যোজনা দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় বাবু সিংহকে দল থেকে তাড়ানো হয়েছে। এই মুহূর্তে জেলবন্দী তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy