চাল-ডাল-গমের ক্ষেত্রে দেড় গুণ দাম বাড়লে তবেই সরকার হস্তক্ষেপ করবে। অর্থাৎ ১০০ টাকা কেজি দরের মুগ ডালের দাম বেড়ে অন্তত ১৫০ টাকা না-হলে কেন্দ্রীয় সরকার আর মাথা ঘামাবে না। পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা কেজি থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ৮০ টাকা হলে তবেই সরকার পদক্ষেপ করবে। এই হিসেবের ক্ষেত্রে গত ১২ মাসের গড় বাজারদর ও গত পাঁচ বছরের গড় বাজারদরের মধ্যে যেটি কম, তাকে স্বাভাবিক দাম ধরা হবে।
অন্যদিকে সরকারের যুক্তি, ১৯৫৫ সালে আইন প্রণয়নের সময় খাদ্য সঙ্কট ছিল দেশে। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হত। কিন্তু এখন দেশে উৎপাদন বহু গুণ বেড়েছে। আমদানির বদলে এখন খাদ্যশস্য রফতানি করে ভারত। প্রতি বছর খাদ্য উদ্বৃত্ত থেকে যায়। কোনও মরসুমে উৎপাদন বেশি হলে মার খান চাষিরা। এই সব কারণেই অত্যবশ্যক পণ্য আইনে বদল আনা অবশ্যম্ভাবী হয়ে পডে়ছিল।
সঙ্গে সরকারপক্ষের আরও বক্তব্য, এই সব খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সরকার এই সব পণ্যের মজুত, বিক্রি বা অন্যান্য বিষয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হিসেবে অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি, যুদ্ধ,দুর্ভিক্ষ, ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে সংশোধনীতে।
সরকারের এই বক্তব্য বিরোধীদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তাদের বক্তব্য,বেসরকারি সংস্থা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি)-র থেকে কম দরে ফসল কিনতে পারবে না, এই মর্মে সরকার শর্ত বেঁধে দিক। বিরোধীদের আক্রমণ ভোঁতা করতে কেন্দ্র সোমবারই তড়িঘড়ি রবি ফসলের এমএসপি ঘোষণা করে দিয়েছিল। কিন্তু চাষিরা তাতে খুশি নন বলে জানিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মীদের মত, সরকার চাইছেন কৃষিকাজ লাভজনক হোক এবং কৃষকের রোজগার দ্বিগুণ হোক। অন্যদিকে যাঁরা বিরোধিতা করছেন,তাঁদের আশঙ্কা, বিপণন যেহেতু সম্পূর্ণ লগ্নিভিত্তিক, এতে কৃষক কোথাও নেই, তাই এর লাভ পুরোটাই কর্পোরেটের ঘরে যাবে। এই শঙ্কা যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তা হলে কিন্তু সরকার যা করতে চাইছেন, বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটি হবে এবং ব্যাপক জনরোষ সৃষ্টি হবে। সেরকমই ধারণা বিভিন্ন মহলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy