মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে কারচুপির অভিযোগ করে একাধিক বার সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সম্প্রতি ফের ওই কারচুপি ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কিন্তু রাহুল কেন এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এখনও দায়ের করলেন না, তা নিয়ে এ বার পাল্টা প্রশ্ন তুললেন কমিশন কর্তারা। তাঁদের মতে, বিষয়টি যখন এতটাই গুরুত্বপূর্ণ, তা হলে যাবতীয়অভিযোগ নিয়ে কেন কমিশনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন নারাহুল গান্ধী।
মহারাষ্ট্রে গত লোকসভায় ভাল ফল করেছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া মঞ্চ। কিন্তু লোকসভার ছ’মাসের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনে পর্যদুস্ত হতে হয় তাদের। তার পর থেকেই নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগে সরব রাহুল। এমনকি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, শাসক দলের নির্দেশে ওই নির্বাচনে আপস করেছে কমিশন। রাহুলের অভিযোগ, শাসক দল তথা বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে ভোটার তালিকায় কারচুপি করে ভুয়ো ভোটার ঢোকানো হয়েছে। তাতে প্রত্যক্ষ মদত ছিল নির্বাচন কমিশনের। এ ছাড়া যে এলাকাগুলিতে লোকসভায় বিজেপির খারাপ ফল হয়েছিল, সেখানে ভুয়ো ভোটারের মাধ্যমে অধিক সংখ্যায় ভোট করানোহয়েছে। ফলে ফলাফলের তারতম্য ঘটেছে। বাড়তি ভোটের ফায়দা পেয়েছেন বিজেপি তথা এনডিএ প্রার্থীরা।
রাহুল গান্ধী কেন আনুষ্ঠানিক ভাবে এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করছেন না, তা নিয়ে উল্টে এ বার প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। পাশাপাশি কমিশনের বক্তব্য, কোনও বিষয়ে যদি রাহুল গান্ধীর সংশয় থাকে, তা হলে কেন কংগ্রেসের ওই নেতা কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন না! কমিশন কর্তাদের মতে, আলোচনার মাধ্যমে সংশয় দূর হওয়া সম্ভব। তাই তাঁরা চান, রাহুল এসে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করুন। কিন্তু গোড়া থেকেই আলোচনার রাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছেন রাহুল। কমিশনের মতে, কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে তার নিজস্ব নির্বাচনী প্রস্তুতি রাজনৈতিক পরিসরেই নেওয়া উচিত। কংগ্রেস রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের পরিবর্তে রেফারি (এখানে নির্বাচন কমিশন)-এর সঙ্গে লড়াইয়ে ব্যস্ত, এমন ধারণা তৈরি হওয়া আদৌও কাম্য নয়। কমিশন মনে করে, ভারতীয় ভোটারেরা যথেষ্ট বুদ্ধিমান। কংগ্রেস নির্বাচনে হারলেই কেন রেফারির সঙ্গে লড়াই শুরু করে দেয়, তা ভোটারেরা বোঝেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)