ফাইল চিত্র।
ভোট ঘোষণার আগেই জোট ঘোষণার মধ্যেও নিখুঁত অঙ্ক। সেই অঙ্ক বলছে, ভোটের আগেই জোটের ঘোষণা করে তা জানিয়ে রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোটের পরে সেই জোট যদি একক বৃহত্তম দলের থেকে বেশি আসন জিতে আসে, তা হলে সেই জোটকেই সরকার গঠনের জন্য ডাকতে হবে রাষ্ট্রপতিকে।
এই প্রথা জেনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়ার, রাহুল গাঁধীরা ভোটের আগেই জোট ঘোষণা করে দিতে চাইছেন। সে ক্ষেত্রে এই জোট যদি ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পরে বিজেপি বা এনডিএ-র থেকে বেশি আসন পায়, তা হলে সরকার গঠনের জন্য জোটকেই ডাকতে বাধ্য হবেন রাষ্ট্রপতি। কারণ প্রথা হল, রাষ্ট্রপতি একক বৃহত্তম দল বা বৃহত্তম জোটকে সরকার গড়তে ডাকবেন। বৃহত্তম দলের থেকে যদি বৃহত্তম জোটের কাছে বেশি আসন থাকে, তা হলে তারাই ডাক পাবে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুভাষ কাশ্যপের মতে, ‘‘যদি কোনও দল বা প্রাক্-নির্বাচনী জোটের কাছে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকে, রাষ্ট্রপতি সেই দল বা জোটকেই ডাকবেন।’’ সংবিধান বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভোটের পরে জোট বেঁধে রাষ্ট্রপতির কাছে গেলে কোনও লাভ হবে না।
জোট যে ভোটের আগেই গঠন হয়েছিল, তা বোঝা যাবে কী করে? শুধু সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ঘোষণা করে দিলেই যথেষ্ট?
প্রবীণ আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে রাখতে হবে যে, এই দলগুলি জোট তৈরি করেছে। লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ
বা বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার আগেই তা জানিয়ে দিতে হয়। এখানে কমিশনের থেকে কোনও স্বীকৃতি পাওয়ার প্রশ্ন নেই।’’
কেন নির্বাচন কমিশন? কারণ, নিয়ম অনুযায়ী, ভোটের ফল কমিশনই আনুষ্ঠানিক ভাবে লোকসভার সচিবালয়ে পাঠায়। রাষ্ট্রপতি তার ভিত্তিতেই ঠিক করেন, কে সরকার গঠনে সক্ষম।
আরও একটি বিষয় মনে করিয়ে দিয়েছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। তা হল, ৫৪৫ আসনের লোকসভায় ৫৪৩টি আসনে নির্বাচন হয়। তাই সাধারণত ২৭২টি আসনকে ‘ম্যাজিক সংখ্যা’ বলা হয়। কিন্তু কোনও দল বা জোট ২৭২-এর থেকে কম আসন পেয়েও সরকার গঠন করতে পারে। আসল শর্ত হল, লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা যেন এই সরকারের বিরুদ্ধে না হন। ব্রিটেনের মতো ভারতেও সংখ্যালঘু সরকার স্বীকৃত। চন্দ্রশেখর, পি ভি নরসিংহ রাও, এইচ ডি দেবগৌড়া, ইন্দ্রকুমার গুজরালদের সরকার লোকসভায় সংখ্যালঘু থেকেও সরকার চালিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy