প্রায় ১৫ বছর পরে ২০২৭ সালে জনগণনা হতে চলেছে দেশ জুড়ে। এ বার পুরো বিষয়টি হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে, যা আগে কখনও হয়নি। দেশের প্রথম ডিজিটাল জনগণনা নিয়ে তাই সতর্ক কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারি সূত্র উল্লেখ করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এ বার সরকারি কর্মচারীরা জনগণনার জন্য তথ্য সংগ্রহ করবেন নিজেদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। তাঁদের জন্য বিশেষ একটি অ্যাপ থাকবে। সংগৃহীত তথ্য সেই অ্যাপের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সার্ভারে আপলোড করতে হবে। এখন বিশেষ সেই অ্যাপ তৈরির কাজ চলছে।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন রেজিস্ট্রার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (আরজিআই) প্রায় ৩৪ লক্ষ গণক নিয়োগ করতে পারে জনগণনার জন্য। তাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবেন। এই কাজে নিজেদের স্মার্টফোন ব্যবহার করবেন। এর পর নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সার্ভারে সেই তথ্য আপলোড করবেন। অ্যাপে তথ্যগুলি দেখা যাবে ইংরেজি এবং প্রত্যেক আঞ্চলিক ভাষায়। অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোনের ক্ষেত্রে একই নিয়ম প্রযোজ্য।
আরও পড়ুন:
দেশে শেষ বার জনগণনা হয়েছে ২০১১ সালে। নিয়ম অনুযায়ী, ১০ বছরের ব্যবধানে আবার ২০২১ সালে জনগণনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিড অতিমারির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে তা আয়োজন করা যায়নি। সূত্রের খবর, ২০২১ সালেই জনগণনার কথা মাথায় রেখে বিশেষ অ্যাপ তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন সেটা নতুন করে আবার তৈরি করা হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি, মোবাইলের উন্নতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে অ্যাপটিতে বেশ কিছু সংস্কার করা হচ্ছে।
প্রাথমিক ভাবে সকল গণককে মোবাইলের মাধ্যমেই তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু যদি কোনও কারণে কেউ খাতায়কলমে তথ্য গ্রহণ করেন, তবে তাঁকে নির্দিষ্ট ওয়েব পোর্টালে সরাসরি তা নথিভুক্ত করতে হবে। এতে জটিলতা, ভুলের সম্ভাবনা অনেক কমবে। এই প্রথম জনগণনার তথ্য যন্ত্রস্থ (ডিজিটালাইজ়ড) হবে গণনাকারীদের স্তরেই। ফলে সময়মতো তথ্য পেতে অসুবিধা হবে না আর।
মোট দুই ধাপে জনগণনা হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, প্রথম ধাপটি শুরু হয়ে যাবে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকেই। ওই সময়ে বাড়ি-জমি-সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে সরকার। পরে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে শুরু হবে জনসংখ্যার গণনা। ব্যতিক্রম কেবল লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড। এই চার জায়গায় ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই জনসংখ্যার গণনা সম্পন্ন করে ফেলবে সরকার। কারণ, ফেব্রুয়ারি-মার্চে ওই সমস্ত এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ তুষারাবৃত থাকে।
জানা গিয়েছে, তথ্য সংগ্রহের গোটা প্রক্রিয়াটি দিল্লি থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। তার জন্য আলাদা একটি ওয়েবসাইট তৈরি করছে কেন্দ্র। জনগণনার জন্য বাজেটে ১৪,৬১৮ কোটি টাকার বরাদ্দ চেয়েছে আরজিআই। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে এটাই প্রথম জনগণনা। এ বারের জনগণনার সঙ্গে জাতগণনার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। মনে করা হচ্ছে, প্রশ্নোত্তরের ভিত্তিতে জাত এবং জনগোষ্ঠী সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যও এ বারের জনগণনা পর্বে সংগ্রহ করা হবে।