Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

৫০ লাখ মানুষের ডিএনএ স্যাম্পেল মোদীকে পাঠাবে বিহার: নীতীশ

ভোটের মুখে যে অস্ত্রে নীতীশ কুমারকে বিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী, এ বার সেটাই তাঁর দিকে ঘুরিয়ে দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। নীতীশ কুমারের ডিএনএ খারাপ, নরেন্দ্র মোদীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ‘স্বাভিমান র‌্যালি’র ডাক দিলেন জেডিইউ-এর ওই নেতা।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ১৩:৪৮
Share: Save:

ভোটের মুখে যে অস্ত্রে নীতীশ কুমারকে বিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী, এ বার সেটাই তাঁর দিকে ঘুরিয়ে দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। নীতীশ কুমারের ডিএনএ খারাপ, নরেন্দ্র মোদীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ‘স্বাভিমান র‌্যালি’র ডাক দিলেন জেডিইউ-এর ওই নেতা। তিনি জানান, আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে র‌্যালি এবং পরবর্তী পর্যায়ে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি স্মারকলিপি পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। শুধু তাই নয়, আন্দোলকারীদের প্রত্যেকে তাঁদের ডিএনএ নমুনাও পরীক্ষার জন্য মোদীকে পাঠাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নীতীশ।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে এক এক বার বিহারে এসেছেন, এবং বাক্য বাণে বিদ্ধ করেছেন নীতীশ-লালু জুটিকে। মোদীর ‘বাণ’কে আগেই তাঁর দিকে ঘুরিয়ে ছুড়েছিলেন নীতীশ। ‘ডিএনএ’ সংক্রান্ত মন্তব্যটা নিজের গায়ে না মেখে গোটা বিহারের শরীরে জড়িয়ে দিয়েছিলেন। এ বার আন্দোলনে নামারও হুমকি দিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, তার দিন ক্ষণও জানিয়ে দিলেন। এনডিএ-র তরফে যদিও দাবি করা হয়েছে, বিহার মানেই নীতীশ নয়, আবার নীতীশ মানেও বিহার নয়।

এ দিন সকাল থেকে বেশ কয়েক দফায় টুইট করেছেন নীতীশ। টুইটবার্তায় তিনি জানিয়েছেন, বিহারের মানুষ এই অপমানের জবাবে গণআন্দোলন গড়ে তুলবে। পটনার গাঁধী ময়দানে আগামী ২৯ অগস্ট ‘স্বাভিমান র‌্যালি’র মাধ্যমে এই আন্দোলনের সূচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই র‌্যালি রাজ্যের অন্য চার-পাঁচটি জায়গাতেও করা হবে। আগামী সেপ্টেম্বরে আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আগাম কর্মসূচির কথাও জানিয়েছেন নীতীশ। তিনি জানান, প্রাথমিক ভাবে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি স্মারকলিপি পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। শুধু তাই নয়, আন্দোলকারীদের প্রত্যেকে তাঁদের ডিএনএ নমুনাও পরীক্ষার জন্য মোদীকে পাঠাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নীতীশ।

গত ২৫ জুলাই বিহারের মুজফ্ফরপুরের জনসভায় মোদী বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেছিলেন, নীতীশ কুমারের ‘ডিএনএ’ খারাপ। পরের লাইনেই বলেছিলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক রাজনীতির ডিএনএ খারাপ।’’ এর পরে নীতীশ কুমার মোদীকে চিঠি দিয়ে জানান, ‘‘আপনার ওই বক্তব্যে আমি এবং বিহারের একটি বড় অংশের মানুষ আহত, অপমানিত হয়েছি।’’ ওই শব্দ প্রয়োগকে অপমানসূচক আখ্যা দিয়ে নীতীশ ‘খোলা চিঠি’তে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, বিহারে পরের সভায় এসে তিনি যেন ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু, ৯ অগস্ট রবিবার গয়ার সভায় নরেন্দ্র মোদী এই প্রসঙ্গে একটি শব্দ খরচ করেননি। উল্টে, বিহারবাসীকে ‘বিমারু’ এবং ‘দুর্ভাগ্যশালী’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ফলে, মোদী দিল্লিতে ফিরে যাওয়ার এক দিনের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন নীতীশ।

আন্দোলনের হুঁশিয়ারি না দিলেও এর আগে মোদীকে পাঠানো ওই খোলা চিঠিতে নীতীশ লিখেছিলেন, ‘‘আমি বিহারের ছেলে। সেই অর্থে আমার আর বিহারের লোকেদের একই ডিএনএ। মোদীজি আপনি জানেন বোধহয়, আমার বাবা এক জন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন, আর মা ছিলেন গৃহবধূ। আমি গ্রামের সাধারণ পরিবেশে বড় হয়েছি। চল্লিশ বছর ধরে গাঁধী-লোহিয়া-জেপির দেখানো পথে চলার চেষ্টা করেছি। নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি।’’ প্রকাশ্য সভাতেও এ নিয়ে সরব হন নীতীশ। তিনি বলেন, ‘‘মোদী প্রধানমন্ত্রীর পদে না থাকলে ওই বক্তব্য নিয়ে ভাবতাম না। কিন্তু আমি বিহারের ভূমিপুত্র। বিহারই আমার মা। আমাকে অপমান করে তিনি আসলে বিহারকেই অপমান করেছেন।’’

এ দিনের টুইটবার্তায় নীতীশ লিখেছেন, ‘‘আমার বিশ্বাস বিহার এবং বিহারবাসীকে অপমান করেছেন যাঁরা এখানকার মানুষ তার যোগ্য জবাব দেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE