Advertisement
E-Paper

রেল ও সহযাত্রীদের প্রতি কৃতজ্ঞ মৃত ট্রেনযাত্রীর পরিবার

নিয়ম ভেঙে বাতানুকূল কামরায় মৃত স্বামীর দেহ নিয়ে স্ত্রীকে সফর করার অনুমতি দিয়েছিল রেল। ব্যতিক্রমী নজির দেখিয়ে সহযাত্রীর মৃতদেহ সঙ্গে নিয়ে সফরে আপত্তি নেই বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন যশবন্তপুর-কামাখ্যা এক্সপ্রেসের বি-২ কোচের যাত্রীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৬ ১৬:৪৯
কাশীবাবুর মৃতদেহ। (ইনসেটে) কাশীনাথ তালুকদার (৪৮)। —নিজস্ব চিত্র।

কাশীবাবুর মৃতদেহ। (ইনসেটে) কাশীনাথ তালুকদার (৪৮)। —নিজস্ব চিত্র।

নিয়ম ভেঙে বাতানুকূল কামরায় মৃত স্বামীর দেহ নিয়ে স্ত্রীকে সফর করার অনুমতি দিয়েছিল রেল। ব্যতিক্রমী নজির দেখিয়ে সহযাত্রীর মৃতদেহ সঙ্গে নিয়ে সফরে আপত্তি নেই বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন যশবন্তপুর-কামাখ্যা এক্সপ্রেসের বি-২ কোচের যাত্রীরা। সফর শেষেও, রেলের সাহায্যে ময়নাতদন্ত ছাড়াই গুয়াহাটির কাশীনাথ তালুকদারের মৃতদেহ নিয়ে আত্মীয়েরা বাড়ির পথ ধরলেন।

গুয়াহাটির আটগাঁও এলাকার বাসিন্দা কাশীনাথ তালুকদার (৪৮) দীর্ঘদিন ধরেই যকৃতের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তিনি চিকিৎসার জন্যে চেন্নাই যান। কাশীনাথবাবুর শ্যালক আয়ূষ দাস জামাইবাবুর দেহ নিতে এসেছিলেন কামাখ্যা স্টেশনে। তিনি বলেন, ‘‘চেন্নাইয়ের চিকিৎসকেরা জানান রোগীর শেষ অবস্থা। চিকিৎসা চালিয়ে লাভ নেই। তাই দিদি ফিরে আসছিলেন। কিন্তু পথেই সব শেষ। কিন্তু সহযাত্রীরা যে মানবিকতা দেখিয়েছেন— তার তুলনা নেই। মাঝপথে জামাইবাবুর দেহ-সহ দিদিকে নামিয়ে দিলে সে অথৈ জলে পড়ত।’’

আরও পড়ুন

রেল সূত্রের খবর, শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ কাটপাডি স্টেশন থেকে স্ত্রী অনামিকা তালুকদার কাশীবাবুকে নিয়ে যশবন্তপুর-কামাখ্যা বাতানুকূল এক্সপ্রেসের বি-২ কামরায় উঠেছিলেন। কটকের কাছে চলন্ত ট্রেনেই কাশীবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন। বালেশ্বরে ট্রেন দাঁড়ালেও স্টেশনে চিকিৎসক ছিল না। কামরাতেই কাশীনাথবাবু মারা যান। রবিবার বেলা ২টো নাগাদ খড়্গপুরের কাছে হিজলি স্টেশনে রেলের চিকিৎসকেরা কাশীবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিয়মানুযায়ী মৃতদেহ নিয়ে রেলে সফর করা যায় না। তা পরের স্টেশনে নামিয়ে দেওয়া হয়। অন্য যাত্রীরাও এ নিয়ে চাপ দেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বি-২ কামরার সহযাত্রীরাই কাশীবাবুর দেহ ও অনামিকাদেবীকে ট্রেন থেকে নামাতে দেননি। মৃতদেহের সঙ্গে যেতে কোনও সমস্যা নেই বলে মুচলেকাও লিখে দেন তাঁরা।

সোমবার বেলা পৌনে দু’টো নাগাদ ট্রেনটি কামাখ্যা স্টেশনে এসে পৌঁছায়। নিয়ম রয়েছে, ট্রেনে কোনও মৃতদেহ থাকলে তার জিম্মা নেয় রেলপুলিশ। তারাই দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। কিন্তু কাশীনাথবাবুর ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। আয়ূষবাবু জানান, ট্রেনের ডাক্তারের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেট সঙ্গেই ছিল। কামাখ্যা স্টেশনে রেলের চিকিৎসক মৃতদেহ ও সব কাগজপত্র পরীক্ষার পরে দেহটি ছেড়ে দেন। রাতে ভূতনাথ শ্মশানে কাশীনাথবাবুর শেষকৃত্য হয়।

Kashibabu train co-passengers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy