পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির বিধানসভায় কৃষি পণ্য বিপণন নিয়ে মোদী সরকারের খসড়া নীতির প্রত্যাহারের দাবিতে প্রস্তাব গ্রহণের দাবি তুলল সংযুক্ত কিসান মোর্চা। দেশের কৃষক সংগঠনগুলির এই ঐক্য মঞ্চের দাবি, ওই খসড়া নীতির মাধ্যমে মোদী সরকার তিন ‘কালো’ কৃষি আইন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। এর মূল লক্ষ্য হল কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে সুবিধা করে দেওয়া। পঞ্জাবের আম আদমি পার্টি(আপ)-র সরকার বিধানসভায় এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করিয়েছে। কিসান মোর্চার দাবি, এ বার পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, হিমাচলপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির বিধানসভাতেও একই রকম প্রস্তাব পাশ করানো হোক।
দিল্লির সীমানা অবরোধ করে কৃষক সংগঠনগুলির এক বছরের আন্দোলনের পরে মোদী সরকার তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে কৃষি পণ্য বিপণনের জাতীয় নীতি বা ‘ন্যাশনাল পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক অন
এগ্রিকালচার মার্কেটিং’-এর খসড়া পাঠিয়েছে। তা নিয়ে রাজ্যের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের খসড়া নীতির বিরোধিতা করেছেন। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, কৃষি বিপণন রাজ্যের অধিকারের বিষয়। সেখানে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। তবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় যে ভাবে গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ-সহ আরও কিছু বিষয়ে ইউজিসি-র খসড়া বিধি প্রত্যাহারের দাবিতে সরকারি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, সে ভাবে কেন্দ্রের কৃষি বিপণন নীতির বিরুদ্ধে প্রস্তাব আসেনি।
মোর্চার অভিযোগ, সংসদে গায়ের জোরে তিন কৃষি আইন পাশ করানোর আগে মোদী সরকার রাজ্যগুলিকে ২০১৭ সালে ‘মডেল কৃষি আইন’ পাঠিয়েছিল। রাজ্যগুলি সেই আইন কার্যকর না করায় সংসদে তিন কৃষি আইন আনা হয়। তাতে বলা ছিল, কৃষিপণ্যের ব্যবসায়ী, রফতানিকারী ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থাগুলি চুক্তির ভিত্তিতে চাষ করিয়ে নিয়ে সরাসরি চাষিদের থেকে ফসল কিনতে পারবে।
কৃষি পণ্য বাজার কমিটির নিয়ন্ত্রণে থাকা মাণ্ডিতে ফসল বেচার কোনও বাধ্যবাধকতা থাকবে না। চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, গম, ভোজ্যতেল তৈলবীজ যত ইচ্ছে মজুত করার ছাড়পত্র দেওয়া ছিল। নতুন খসড়া নীতিতে সেই সব কথাই বলা হয়েছে। মোদী সরকার নিজে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়ে এখন রাজ্যগুলির মাধ্যমে এই নীতি রূপায়ণের চেষ্টা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)