Advertisement
E-Paper

শাহের মন্ত্রকের নিশানায় লাদাখের ‘র‌্যাঞ্চো’, বিদেশি অনুদানে আইন ভাঙার অভিযোগে লাইসেন্সে কোপ

যে লাদাখবাসীর আদলে বানানো হয়েছিল ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর আমির খানের ‘র‌্যাঞ্চো’ চরিত্রটি, সেই সোনম ওয়াংচুকের সংস্থা এ বার বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রকের নিশানায়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৫০

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমায় আমির খানের ‘র‌্যাঞ্চো’ চরিত্রটি বানানো হয়েছিল তাঁরই আদলে। লাদাখবাসী সেই সোনম ওয়াংচুককে এ বার নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বার্তা, ‘আল ইজ নট ওয়েল’! লাদাখের বুধবারের অশান্তির জন্য বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে দায়ী করেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইঞ্জিনিয়র, গবেষক তথা সমাজকর্মী সোনমের সংস্থার বিরুদ্ধে বিকেলেই বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন (ফরেন কনট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট বা এফসিআরএ) লঙ্ঘনের অভিযোগে পদক্ষেপ করল অমিত শাহের মন্ত্রক।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সোনমের সংস্থা ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অফ লাদাখ’ (এসইসিএমওএল) এফসিআরএ-র ৮, ১২, ১৭, ১৮ এবং ১৯ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে বিদেশি অনুদান নিয়েছিল। অনুদানের অঙ্ক ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা। তাই তাদের এ সংক্রান্ত লাইসেন্স বাতিল করা হল।

ঘটনাচক্রে, সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছিল, বেআইনি ভাবে বিদেশি অনুদান নেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি সোনমের কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, কোনও ব্যক্তি বা সংস্থাকে বিদেশি অনুদান নিতে হলে কিছু নিয়ম মানতে হয়। নিতে হয় কিছু নির্দিষ্ট সরকারি ছাড়পত্র। সেই শর্তে ভাঙলে এফসিআরএ ধারায় মামলা দায়ের করা হতে পারে। সোনমের সংস্থা ‘হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভস লাদাখ’ (এইচআইএএল) এবং ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অফ লাদাখ’ (এসইসিএমওএল)-এর বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে বিদেশি অনুদান নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বলে ওই খবরে জানানো হয়েছিল।

পিটিআই-এর প্রতিবেদককে বৃহস্পতিবার সোনম জানিয়েছিলেন, প্রায় ১০ দিন আগে সিবিআই-এর তদন্তকারী দল সরকারি নির্দেশনামা নিয়ে তাঁর কাছে এসেছিল। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই জানিয়েছে, আমাদের বিরুদ্ধে এফসিআরএ-র অধীনে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র না নিয়ে বিদেশি অনুদান গ্রহণের অভিযোগ তোলা হয়েছে।’’ সোনমের কথায়, ‘‘আমরা বিদেশি তহবিলের উপর নির্ভরশীল থাকতে চাই না, তবে আমরা আমাদের জ্ঞান রফতানি করি এবং তার বিনিময়ে খরচ সংগ্রহ করি। এই ধরনের তিনটি ক্ষেত্রে, তারা (সিবিআই) ভেবেছে এটি বিদেশি অনুদান।’’ সিবিআই তদন্তকারী দল এখনও লাদাখে আছে বলেও জানিয়েছেন সোনম।

সিবিআই আধিকারিকেরা তথ্যের সন্ধানে এইচআইএএল এবং এসইসিএমওএল-এর দফতরে গিয়েছিলেন বলেও জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রাপ্ত বিদেশি অনুদানের বিবরণ চাওয়া হয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্গত করে পূর্ণাঙ্গ স্বশাসনের আওতায় আনা এবং পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫ দিনের জন্য অনশনে বসেছিলেন ওয়াংচুক-সহ ‘লেহ অ্যাপেক্স বডি’-র কয়েক জন সদস্য। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, তার পরেই সিবিআই-এর নিশানা হয়েছেন তিনি। সোনমের অভিযোগ, সরকারি নির্দেশে ২০২২-২৪ পর্বে বিদেশি অনুদান নিয়ে তদন্তের কথা বলা হলেও সিবিআই ২০২০ এবং ২০২১ সালের নথি তলব করেছে তাঁদের কাছে।

শিক্ষা-গবেষক সোনম জানিয়েছেন, পরিষেবা চুক্তি মেনে রাষ্ট্রপুঞ্জ, সুইৎজ়ারল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইটালির একটি সংস্থাকে তাঁরা ভারতীয় জ্ঞান সরবরাহ করেন। এর আগে লাদাখ অঞ্চলে উষ্ণায়নের ফলে হিমবাহ গলে যাওয়া ও প্রকৃতির ‘খামখেয়ালিপনার’ জন্য নগরায়ন, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিকেও দায়ী করেছেন পরিবেশকর্মী সোনম। পেয়েছেন ‘জেন জ়ি’র সমর্থন। প্রসঙ্গত, আগামী ৬ অক্টোবর লাদাখের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে কেন্দ্রের। তার আগে বুধবার লেহ শহরে বিক্ষোভ দেখান কয়েক হাজার তরুণ-তরুণী। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীনই লেহ-তে বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। শুধু তা-ই নয়, পার্টি অফিসের সামনে থাকা একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। তার পরই পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষে মোট পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার জন্য সোনমের উস্কানি ‘অন্যতম কারণ’ বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল। ঘটনাচক্রে, তার পরেই পদক্ষেপ করা হল।

Sonam Wangchuk Ladakh Foreign Contribution (regulation) Act (FCRA) FCRA MHA Amit Shah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy