Advertisement
E-Paper

কুনোর জঙ্গলে মৃত্যু হল আরও এক চিতার, এই নিয়ে ন’টি, দেহ পাঠানো হল ময়নাতদন্তের জন্য

গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা মেনে আফ্রিকার একাধিক দেশ থেকে ভারতে চিতা আনা হয়। প্রথমে নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা আনা হয় কুনোর জঙ্গলে। পরে আসে আরও ১২টি চিতা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ১৪:৫২
Female Cheetah found dead in Madhya Pradesh’s Kuno national park

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে মৃত্যু হল আরও এক চিতার। বুধবার সকালে জঙ্গলের ভিতর থেকে ধাত্রী নামের ওই মহিলা চিতাটির দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত কুনোর জঙ্গলে মোট ৯টি চিতার মৃত্যু হল।

গত ১৪ জুলাই জঙ্গল থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সুরজ নামের একটি পুরুষ চিতার দেহ। তার দু’দিন আগেই মৃত্যু হয়েছিল আফ্রিকা থেকে আনা সপ্তম চিতা তেজসের। তার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা ছিল, চিতাটি ভিতর থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিছু দিন আগে জঙ্গলের আর একটি চিতার সঙ্গে তার লড়াই বাধে। সে সময় শরীরে একাধিক ক্ষত হয়ে গিয়েছিল। ওই লড়াইয়েরই রেশ কাটাতে পারেনি তেজস। তার পর থেকেই আতঙ্কে ভুগছিল আফ্রিকা থেকে ভারতের জঙ্গলে আনা চিতাটি। যা তাকে শারীরিক ভাবে আরও দুর্বল করে দেয়। তাতেই ঘনিয়ে আসে মৃত্যু।

গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা মেনে আফ্রিকার একাধিক দেশ থেকে ভারতে চিতা আনা হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা আনা হয় কুনোর জঙ্গলে। এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা আসে ভারতে। এ বছর মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বনপ্রাণ বিশেষজ্ঞ ভিনসেন্ট ভান ডার মেরওয়ে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন, ভারতে আরও চিতার মৃত্যু হতে পারে। তাঁর দাবি ছিল, অন্য সমস্ত দিক ঠিক থাকলেও চিতা যখন নিজের এলাকা চিহ্নিত করবে তখন তাকে মোকাবিলা করতে করতে হবে বাঘ এবং চিতাবাঘের সঙ্গে। সেই লড়াইয়ে বিদেশ থেকে আনা চিতার এঁটে ওঠা মুশকিল। যদিও অন্য কোনও প্রাণীর সঙ্গে মারামারিতে এখনও পর্যন্ত কোনও চিতার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

একের পর এক চিতার মৃত্যু নিয়ে এর আগে মুখ খুলেছে সুপ্রিম কোর্টও। কিছু দিন আগে এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ। বিষয়টিকে ‘মর্যাদার প্রসঙ্গ’ না বানিয়ে চিতাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের জন্য কেন্দ্রকে সক্রিয় হতে বলেন বিচারপতি গাভাই। কেন্দ্রের আইনজীবী, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্যা ভাটিকে বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে আরও দু’টি চিতার মৃত্যু হয়েছে। কেন এটি একটি মর্যাদার ইস্যু হয়ে উঠছে? কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ করুন।’’

অন্য কোনও অভয়ারণ্যের বদলে কেন আফ্রিকা থেকে আনা চিতাদের এক জায়গায় রাখা হয়েছে, সে প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি গাভাই। প্রসঙ্গত আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ থেকে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে চিতা পাঠাতে চাইছে না মোদী সরকার। এ প্রসঙ্গে, বন্যপ্রাণ বিজ্ঞানী তথা মোদী সরকারের ‘ন্যাশনাল চিতা অ্যাকশন প্ল্যান’ (জাতীয় চিতা পুনঃস্থাপন কর্মসূচি)-এর সদ্য অপসারিত প্রধান যাদবেন্দ্রনাথ ঝালার সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথাও শীর্ষ আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়।

প্রসঙ্গত বিজ্ঞানী ঝালা সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের যা পরিসর, সেখানে ৫০টি দূরের কথা ২০টি চিতার স্বচ্ছন্দ বসবাসেরও সুযোগ নেই। তা ছাড়া ওখানে চিতাদের শিকার করে খাওয়ার মতো হরিণ বা বনশুয়োরের অভাব রয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের লাগোয়া রাজস্থানের মুকুন্দারা অভয়ারণ্যের কিছুটা অংশও চিতা পুনঃস্থাপন কেন্দ্রের অন্তর্গত করা প্রয়োজন।’’

Cheetah Kuno National Park Madhya Pradesh Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy