ক্যাবিনেটে রদবদল নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা সেরে ফেলেছেন নরেন্দ্র মোদী। খবর বিজেপি সূত্রের। —প্রতীকী ছবি।
লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে নোট বাতিল। আর্থিক বৃদ্ধিও পড়তে পড়তে তলানিতে। একের পর এক সিদ্ধান্ত ঘিরে উঠছে প্রশ্ন। তার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার সদস্যদের উইকেট এক এক করে পড়তে শুরু করল!
কাকতালীয়? না কি ব্যর্থতার মোড় ঘোরানোর কৌশল? না হলে যে মোদী-জমানায় মন্ত্রিসভার আগাম খবর সচরাচর বেরোয় না, সেখানে আজ বিজেপির পক্ষ থেকে পুরোদস্তুর প্রচার হল— ভাল কাজ করে দেখাতে না পেরেই বাদ যাচ্ছেন একাধিক মন্ত্রী।
আর এখানেই প্রশ্ন বিরোধীদের। নোট বাতিল থেকে আর্থিক বৃদ্ধি— সব ব্যাপারে খোদ মোদীই যেখানে ব্যর্থ, সেখানে তিনি কী করে বাকি মন্ত্রীদের বাদ দেন? এই মন্ত্রীরা বাদ পড়লে মোদী নিজে নন কেন? কেন তিনি ইস্তফা দেবেন না? কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘রদবদলের নাটক না করে প্রধানমন্ত্রী আগে অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন।’’
মোদীর নির্দেশে যে মন্ত্রীদের কাছ থেকে ইস্তফা আদায় করে নিয়েছেন অমিত শাহ, বেজায় ক্ষুব্ধ তাঁরাও। কিন্তু মোদী-রাজে তাঁরা এতটাই ত্রস্ত, যে ইস্তফা দিয়েও খোলাখুলি কিছু বলতে পারছেন না। যেমন উমা ভারতী। ইস্তফা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই একদা ‘অগ্নিকন্যা’ আজ বলছেন, ‘‘আমি এই প্রশ্ন শুনিইনি। না শুনব, না জবাব দেব।’’ দলীয় সূত্রের মতে, ইস্তফা দিয়েও ক্ষুব্ধ উমা বিষয়টি সঙ্ঘ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। যাতে অমিত শাহের সঙ্গে মথুরার সম্মেলনে এই নিয়ে কথা বলেন তাঁরা।
ইস্তফা দেওয়া বাকি নেতাদের অবস্থাও তথৈবচ। রাজীব প্রতাপ রুডি, সঞ্জীব বালিয়ান, ফগ্গন সিংহ কুলস্তের মতো ইস্তফা দেওয়া মন্ত্রীরা মুখ তো খুলেছেন। খুব অল্প কথায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। দলের সৈনিক হিসেবে এখন যা কাজ পাবেন, করবেন। আর ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ উগরে বলেছেন, কোন মানদণ্ডে তাঁদের মন্ত্রিত্ব খোয়া গেল, বোঝাই গেল না! বন্দারু দত্তাত্রেয় আবার ইস্তফা জমা দিয়ে সারা দিন নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছেন। সব মিলিয়ে পদ্ম-শিবিরে ক্ষোভের হাওয়া।
বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য আজ প্রচার করেন, ছ’মাস ধরে মূল্যায়ন হচ্ছিল মন্ত্রীদের। ইতিবাচক কাজ করলে ‘পি’ (পজিটিভ), আর নেতিবাচক কাজ করলে ‘এন’ (নেগেটিভ)। এই ‘পি’ আর ‘এন’-এর তালিকাই প্রধানমন্ত্রী তুলে দেন অমিত শাহের হাতে। তা দেখেই মন্ত্রী ধরে ধরে ইস্তফা চেয়েছেন বিজেপি সভাপতি। এতে কারও মন্ত্রক যাচ্ছে, কারও বদল হচ্ছে। সেই অঙ্কেই রুডি, কলরাজ মিশ্ররা খোয়াতে পারেন মন্ত্রিপদ। আর সুরেশ প্রভু, রাধামোহন সিংহদের মন্ত্রক বদলে যেতে পারে।
বিজেপির দাবি, যাঁরা বাদ পড়ছেন, তাঁরা কেউ সংগঠনের কাজ করবেন, কেউ যাবেন রাজভবনে। সবাই তো দলের সৈনিক। ক্ষতি কী! মোহন ভাগবতের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অমিত শাহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy