১২৬০০ ফুট উঁচুতে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। তার পরই সেই বৃষ্টির জন্য হড়পা বান পাহাড়ের বুক চিরে নীচের দিকে নেমে আসে। ঘণ্টায় ৪৩ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে তছনছ করে দেয় উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর ধরালী গ্রাম এবং হর্ষিল উপত্যকাকে। পাহাড় থেকে সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত হয়ে ক্ষীরগঙ্গা ধরে নেমে আসে হড়পা বান। সঙ্গে বয়ে নিয়ে আসে বিশাল বিশাল পাথর, বোল্ডার আর কাদার স্রোত। আর সেই পাথর, কাদা আর জলের স্রোতে একের পর এক বাড়ি, হোটেল নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। মঙ্গলবার এমনই এক ভয়ঙ্কর এবং শিরদাঁড়া বেয়ে হিমশীতল স্রোত বয়ে যাওয়ার মতো দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছে গোটা দেশ।
পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা যে ধরালী পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম জায়গা, মঙ্গলবারের পর থেকে সেই জায়গা যেন ‘মৃত্যুপুরী’তে পরিণত হয়েছে। যে গ্রাম হোটেল, হোমস্টে, রেস্তরাঁয় সাজানো ছিল, এখন সেখানে শুধু জল আর কাদার স্রোত বইছে। জানা গিয়েছে, শুধু ধরালী গ্রামই নয়, সুখী টপেও মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। ফলে পর পর দু’বার মেঘভাঙা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে। ক্ষীরগঙ্গা হয়ে হড়পা বান নেমে আসায় বোল্ডার আর কাদার স্রোতে ভাগীরথীর প্রবাহ রুখে দিয়েছে। ফলে নদীর পাশে একটি অস্থায়ী ঝিলের জন্ম হয়েছে, যা আরও বড় আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথর, কাদার স্রোত ১৩.৫ একর এলাকাকে গ্রাস করে ভাগীরথীতে নিয়ে গিয়ে ফেলেছে। পাহাড় থেকে ক্ষীরগঙ্গা ধরে নেমে আসা হড়পা বানের পথে বাঁক থাকায় সেটি বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে হড়পা বানের গতিপথ বদলে গিয়েছিল। ভাগীরথীর ধারে রয়েছে হর্ষিল হেলিপ্যাড, সেনাছাউনি, ধরালী গ্রাম, কল্প কেদার মন্দির। হড়পা বানে সেনাছাউনি, হেলিপ্যাড, ধরালী গ্রাম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
উত্তরকাশীর হর্ষিল উপত্যকায় ধরালী গ্রাম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯০০৫ ফুট উঁচুতে এই গ্রাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য খুবই জনপ্রিয়। হর্ষিল এবং গঙ্গোত্রীর মাঝে পড়ে এই গ্রাম। হর্ষিল থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে। উত্তরকাশী থেকে ধরালী যেতে আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা লাগে। এই গ্রামটি উত্তরকাশী জেলার ভটওয়ারী তহসিলের অন্তর্গত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই গ্রামে ১৩৭ পরিবারের বাস। জনসংখ্যা সব মিলিয়ে ৫৮৩।