মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে হড়পা বান। জলের তোড়ে ভেসে গেল উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ধরালী গ্রামের বিস্তীর্ণ অংশ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই গ্রামবাসীদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বহু বাড়িঘর তো বটেই, গ্রামে থাকা অন্তত ২০-২৫টি হোটেল এবং হোমস্টে ভেসে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে অন্তত ১০-১২ জন আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের নিকটবর্তী ক্ষীরগঙ্গা নদীর উচ্চ অববাহিকায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটে। তার পরেই উঁচু থেকে দু’কূল ছাপিয়ে গ্রামের দিকে নামতে শুরু করে ফুঁসতে থাকে ওই নদী।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, উঁচু পাহাড় থেকে নীচে থাকা গ্রামে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ছে নদীর জল (যদিও এগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। তার পর সব কিছু ভাসিয়ে আরও নীচের দিকে নামছে সেই জল এবং কাদাস্রোত। ইতিমধ্যেই এই দুর্যোগে চার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না প্রায় ৫০ জনের। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি হাত লাগিয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি)-এর ১৬ জন সদস্য।
হিমালয়ের কোলে থাকা উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। হরিদ্বারে গঙ্গা বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। বিপদসীমার উপরে রয়েছে কালী নদীও। নাগাড়ে ভারী বর্ষণের জেরে উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেহরাদূনে সোমবার সমস্ত স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়। এই পরিস্থিতিতে হড়পা বানের আশঙ্কা ছিলই। অল্প সময়ে অনেক পরিমাণে বৃষ্টির (মেঘভাঙা বৃষ্টি) জেরে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হয় উত্তরকাশী জেলার ধরালী গ্রামে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ভারী বৃষ্টির জেরে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জলের তলায়। চারধামের অন্যতম গঙ্গোত্রীর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ধরালী গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টির কিছু ক্ষণ পরেই নিকটবর্তী সুখী টপে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। সেখানে অবশ্য এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ধরালী গ্রামের মাত্র চার কিলোমিটার দূরে, হরসিলে রয়েছে সেনার ক্যাম্প। সেনার তরফে জানানো হয়েছে, তাদের ১৫০ জন ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। ১৫-২০ জনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চলছে। আহতদের চিকিৎসা সেনার ক্যাম্পেই। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে দুর্যোগটি হয়। তার কিছু সময় পরেই উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে তিনি লেখেন, “ধরালীর হড়পা বান নিয়ে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছি। আইটিবিপি-র তিনটি দল, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) চারটি দল ঘটনাস্থলে গিয়েছে।”