Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
মৃত চার

বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত অসম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড

টানা বৃষ্টি ও ঝড়ে বিপর্যস্ত অসম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড। অসমে ধসে ও গাছ পড়ে এখনও পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মণিপুরে ভেঙেছে দু’টি বাঁধ। নাগাল্যান্ডের জুনহেবটোয় ধস নেমে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। গত কাল রাতে বৃষ্টির জেরে অসমে ৩৭ ও ৪০ নম্বর জাতীয় সড়কের বহু স্থানে জল জমে যান চলাচল থমকে যায়।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৯
Share: Save:

টানা বৃষ্টি ও ঝড়ে বিপর্যস্ত অসম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড। অসমে ধসে ও গাছ পড়ে এখনও পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মণিপুরে ভেঙেছে দু’টি বাঁধ। নাগাল্যান্ডের জুনহেবটোয় ধস নেমে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক।

গত কাল রাতে বৃষ্টির জেরে অসমে ৩৭ ও ৪০ নম্বর জাতীয় সড়কের বহু স্থানে জল জমে যান চলাচল থমকে যায়। জোড়াবাট এলাকার ১৩ মাইলে ধসের ফলে একটি প্রতিষ্ঠানের দেওয়াল ধসে গিয়ে নীচে অন্য একটি বাড়ির উপরে পড়লে ভারতী বড়ো ও তাঁর কন্যা অনামিকা বড়ো ঘটনাস্থলেই মারা যান। জখম হন গৃহকর্তা দীনেশ বড়ো। জেলাশাসকের নির্দেশে সোনাপুরের সার্কেল অফিসার মনীন্দ্র নাথকে ঘটনার তদন্ত চালিয়ে শীঘ্র রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, বাক্সা জেলার কাহিরবাড়িতে কাঁচাবাড়ির মাথায় গাছ পড়ে ঘুমের মধ্যেই মারা যান রাজু স্বরগয়ারি ও তাঁর কন্যা অনুপমা। বাক্সায় ঝড়ে ও গাছ পড়ে প্রায় ৫০টি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ভুটান যাওয়ার রাস্তাও দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে। লখিমপুর জেলাতেও বাজ পড়ে এক ব্যক্তি মারা যান।

অন্য দিকে, টানা বৃষ্টির জেরে, মণিপুরের উখরুল জেলায় থৌবাল নদীর উপরে নির্মীয়মাণ মপিথেল বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ায় আশপাশের গ্রামবাসীরা ঘর ছেড়ে পালান। অনেকে বৃষ্টির মধ্যেই ঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় সংগঠনগুলির অভিযোগ, বিস্তর আপত্তি সত্ত্বেও বাঁধের কাজ শেষ হওয়ায় আগেই নদীর জল আটকে দেওয়ায় এই বিপত্তি। বাঁধ লাগোয়া ইথাম, মইরাংপুরেল ও টুমাখং গ্রামের বাসিন্দারা এখন পাশের গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। এই বাঁধ গড়া নিয়ে বহু সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছিল। কিন্তু সরকার আপত্তিতে কান দেয়নি। বাঁধ তৈরি শেষ হওয়ার আগেই জানুয়ারি মাস থেকে নদীর জল আটকে দিয়ে বাঁধের রিজার্ভারে জল ঢোকানো হচ্ছিল। ফলে নদীতে জল শুকিয়ে

গিয়ে স্থানীয় মানুষ সমস্যায় পড়েছিলেন। এ বার অতিবৃষ্টির জেরে রিজার্ভার আর জল ধরে রাখতে না পারায় গত দু’দিন ধরে তোড়ে জল ছাড়া হচ্ছে। তার মধ্যেই বাঁধের গায়ে একাধিক ফাটল দেখা দেয়। তত্ত্বাবধায়ক ইঞ্জিনিয়ার ই মহিন্দ্র জানান, ‘‘এখনই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। গত কাল থেকে শ্রমিকরা ফাটল মেরামতি শুরু করেছেন।’’

এ দিকে, বৃষ্টির ফলে গত কাল ইম্ফল নদীর বুকে নির্মীয়মাণ সেকমাই বাঁধ ভেঙে ভেসে যায়। ফলে আওয়াং সেকমাই এলাকার বাসিন্দারা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছিল বেশ কয়েকদিন আগেই। কিন্তু প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বাঁধ গড়ার ক্ষেত্রে গুণমাণেও কোনও নজরদারি ছিল না। নাগাল্যান্ডের জুনহেবটো জেলায় ডিসি হিল কলোনি, আলাহুটো কলোনি, নর্থ পয়েন্ট কলোনি ও নিতো মাউন্ট সেন্টারে ধসের জেরে বহু বাড়ি, জমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ভেসে গিয়েছে গাড়ি ও গবাদি পশু। অন্তত ৫০টি পরিবার ধসের জেরে গৃহহীন হয়ে পড়েছে। ধসে চারটি শিশু চাপা পড়েছিল। তবে তাদের জীবন্ত উদ্ধার করা গিয়েছে। টিজু ও সুথা নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assam flood river monipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE