(বাঁ দিকে) ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ান। ছবি: পিটিআই।
গাজ়ায় যুদ্ধের আবহে আমেরিকার অসন্তোষের আশঙ্কা উপেক্ষা করেই ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করল ভারত। সোমবার বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ইরানের বিদেশমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানের সঙ্গে সে দেশের রাজধানী তেহরানে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, চাবাহার বন্দর চুক্তির বাস্তবায়ন, উত্তর-দক্ষিণ করিডোর (আইএনএসটিসি) প্রকল্পের পাশাপাশি প্যালেস্টাইন পরিস্থিতি এবং লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলা নিয়েও দু’জনের আলোচনা হয়েছে।
চাবাহার বন্দর চুক্তি ভারতের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত—দু’দিক থেকেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন ইরানি প্রেসিডেন্ট মহম্মদ খাতামির নয়াদিল্লি সফরের সময়ই এই বন্দরের পরিকাঠামো নির্মাণ নিয়ে নয়াদিল্লি-তেহরান আলোচনা শুরু হয়েছিল। ইরানের প্রয়োজন ছিল ভারতীয় বিনিয়োগে সে দেশে একটি বৃহৎ বন্দর তৈরির পরিকাঠামো। আর ভারতের লক্ষ্য ছিল, আফগানিস্তানের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্যের রাস্তা তৈরি করতে।
২০১৮ সালে ইরানের উদারপন্থী প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানির দিল্লি সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পরে সই হয়েছিল চাবাহার বন্দর চুক্তি। কিন্তু ২০২১ সালে ভোটে জিতে কট্টরপন্থী নেতা সাইদ ইব্রাহিম রইসি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে চাবাহার নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। ঘটনাচক্রে, সে সময় থেকেই চিনের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে। জয়শঙ্কর সোমবার তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘ইরানের বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লাহিয়ানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। চাবাহার বন্দর এবং আইএনএসটিসি প্রকল্পের পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।’’ ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসির সঙ্গেও সোমবার সাক্ষাৎ করেন জয়শঙ্কর।
ইরানের মদতপুষ্ট হুথি বাহিনী গত নভেম্বর থেকেই ইয়েমেন উপকূল থেকে ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে লোহিত সাগরগামী বাণিজ্যিক জাহাজগুলির উপর। আক্রান্ত হয়েছে কয়েকটি ভারতীয় জাহাজও। ইতিমধ্যেই পশ্চিম এশিয়ায় মোতায়েন আমেরিকা সেনা হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে শুরু করেছে। লোহিত সাগরের অদূরে মোতায়েন হয়েছে ভারতীয় নৌসেনাও। বিষয়টি নিয়ে আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গেও কথা হয়েছে জয়শঙ্করের। এই পরিস্থিতিতে সোমবার জয়শঙ্কর-আবদুল্লাহিয়ান বৈঠকে লোহিত সাগরের বাণিজ্যিত জলযানগুলির নিরাপত্তার প্রসঙ্গও এসেছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy