শবরীমালার বিগ্রহের সোনা চুরি কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল মন্দিরেরই দেবস্বম বোর্ডের (টিডিবি) প্রাক্তন কর্তা সুধীশ কুমারকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুধীশকে নিজেদের হেফাজতে নেয় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিগ্রহের সোনার পাতকে তামার পাত বলে নথিতে উল্লেখ করেছিলেন সুধীশ। ওই ধাতু যে সোনা, তা সুধীশ ভাল ভাবে জানতেন। তার পরেও তিনি সেটিকে তামা বলে চালিয়ে দেন। মিথ্যা তথ্য নথিভুক্ত করা এবং একইসঙ্গে সোনা চুরিতে সহযোগিতা করার অভিযোগে সুধীশের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত তথা স্পনসর উন্নিকৃষ্ণন পট্টিকে সোনা চুরিতে সহযোগিতা করা এবং মন্দিরের সামগ্রীর তালিকায় ভুল তথ্য নথিভুক্ত করিয়েছিলেন সুধীশ।
২০১৯ সালে টিডিবি-র এগজ়িকিউটিভ অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন সুধীশ। ঘটনাচক্রে, উন্নিকৃষ্ণনকে তিনিই স্পনসর হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, সুধীশের সময়কালেই বিগ্রহ থেকে সোনা উধাও হয় বলে অভিযোগ। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, উন্নিকৃষ্ণনকে তিনিই স্পনসর করার জন্য দেবস্বম বোর্ডের কাছে সুপারিশ করেছিলেন। আর তদন্তকারীদের সন্দেহ, আগে থেকেই যোগসাজশ তৈরি হয়েছিল। প্রতি ক্ষেত্রেই বিগ্রহের সোনার পাতকে তামার পাত বলে তথ্য প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন সুধীশ। তদন্তকারী দলটি জানিয়েছে, সোনার পাত উন্নিকৃষ্ণন না পেলেও, মন্দিরের নথিতে তাঁর নাম উল্লেখ করেছিলেন সুধীশ। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, সোনা চুরিতে মুরারি বাবু নামে আরও এক অভিযুক্তকে সাহায্য করেছিলেন টিডিবি-র প্রাক্তন কর্তা।
শবরীমালার গর্ভগৃহ ‘শ্রীকোভিল’-এর দেওয়াল এবং দ্বারপালকের মূর্তি থেকে সোনা উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ২০১৯ সালে বিগ্রহের ওজন ছিল ৪২ কেজি ৮০০ গ্রাম। কিন্তু পরে দেখা যায়, বিগ্রহের ওজন হয়ে গিয়েছে ৩৮ কেজি ২৫৮ গ্রাম! কী ভাবে বিগ্রহের ওজন হ্রাস পেল, তা জানতে চেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই ঘটনার তদন্তেই উঠে আসে উন্নিকৃষ্ণনের নাম।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, বিগ্রহের মেরামতির জন্য ২০১৯ সালের জুলাই মাসে একবার মন্দিরের দ্বারপালক মূর্তি এবং দরজার সোনার আবরণ খোলা হয়েছিল। সে সময় সোনার ওজন ছিল ৪২.৮ কেজি। পরদিন ওই সোনা চেন্নাইয়ের একটি সংস্থায় পাঠানোর জন্য উন্নিকৃষ্ণনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু সোনা চেন্নাইয়ে পৌঁছোয় ৩৯ দিন পর। সে সময় ওজন করতে গিয়ে দেখা যায় সোনার ওজন হয়ে গিয়েছে ৩৮.২৫ কেজি। অর্থাৎ, ৪.৫৪ কেজি সোনা উধাও! ।