ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সে রাজ্যের শাসকদল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) প্রধান শিবু সোরেন প্রয়াত। কিডনির সমস্যা নিয়ে দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসা চলছিল। রাখা হয়েছিল ভেন্টিলেশনে। সোমবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। তাঁর পুত্র তথা ঝাড়খণ্ডের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এখন দিল্লিতে। সোমবার সকালে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টের মাধ্যমে বাবার মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করেছেন তিনি।
জেএমএম প্রধানের বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন তিনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, কিডনির সমস্যা নিয়ে তাঁকে দিল্লির স্যর গঙ্গা রাম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় গত জুন মাসের শেষ সপ্তাহে। সেই থেকে হাসপাতালেই ছিলেন। ২ অগস্ট জানা যায়, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে এবং তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে সস্ত্রীক দিল্লি পৌঁছেছিলেন হেমন্ত। সোমবার সকালে তিনি সমাজমাধ্যমে দু’টি লাইন লিখে বাবার মৃত্যুসংবাদ জানান। লেখেন, ‘‘শ্রদ্ধেয় দিশম গুরুজি আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আজ আমি শূন্য হয়ে গেলাম।’’
শিবুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লিখেছেন, ‘‘শিবু সোরেন তৃণমূল স্তরের নেতা ছিলেন। জনগণের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা ছিল অটল। জনজীবনের নানা স্তরে উঠে এসেছিলেন তিনি। বিশেষত, উপজাতি সম্প্রদায়, দরিদ্র ও নিপীড়িতদের ক্ষমতায়নের পক্ষে ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে আমি শোকাহত। ওঁর পরিবার এবং অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। ওঁর পুত্র হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’’ পরে প্রধানমন্ত্রী সোরেন পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং শিবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
দিল্লিতে পিতৃহারা হেমন্ত সোরেনকে সান্ত্বনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ছবি: এক্স।
আরও পড়ুন:
দিল্লির ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোমবার বুলেটিন দিয়ে জানিয়েছেন, সকাল ৮টা ৫৬ মিনিটে শিবু সোরেন প্রয়াত হয়েছেন। দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছিলেন তিনি। কিডনির অসুখ ছিল। এ ছাড়া মাস দেড়েক আগে তাঁর স্ট্রোক হয়েছিল। গত এক মাস ধরে শিবুকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
শিবু সোরেনকে শেষ শ্রদ্ধা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ছবি: এক্স।
২০০৫ সালে প্রথম ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন শিবু। ১০ দিনের জন্য ওই পদে ছিলেন। পরে ২০০৮ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এবং ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে প্রথম থেকে ‘গুরুজি’ নামেই পরিচিত ছিলেন শিবু। ঝাড়খণ্ড আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। মূলত তাঁর আন্দোলনের জেরেই ২০০০ সালে বিহার ভেঙে আলাদা রাজ্যের স্বীকৃতি পায় ঝাড়খণ্ড। কেন্দ্রের কয়লামন্ত্রীর পদে দায়িত্ব সামলেছেন শিবু। পরে কয়লা কেলেঙ্কারিতেও তাঁর নাম জড়িয়েছিল।