Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পাকিস্তানি নিশানায় সেনার দল, মেজর-সহ নিহত চার

সেনার মুখপাত্র জানান, দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ রাজৌরির টোপা বারাত গালায় টহল দিচ্ছিল সেনার একটি দল। তখনই তাদের লক্ষ করে গুলি চালায় পাক সেনা। জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনার হামলায় নিহত হলেন এক মেজর-সহ চার জন সেনা। দিল্লির কর্তাদের মতে, পাক সেনাপ্রধান কমর বাজওয়া সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে শান্তি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তার পরেই এই হামলা চালাল পাক সেনা। বোঝাই যাচ্ছে বাজওয়া মুখে যা-ই বলুন, পাক সেনা ভারত-বিরোধিতার অবস্থান থেকে একচুলও নড়েনি।

সেনার মুখপাত্র জানান, দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ রাজৌরির টোপা বারাত গালায় টহল দিচ্ছিল সেনার একটি দল। তখনই তাদের লক্ষ করে গুলি চালায় পাক সেনা। জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও। হামলায় মেজর মোহরকর প্রফুল্ল অম্বাদাস, ল্যান্স নায়েক গুরমেল সিংহ, জওয়ান পরগত সিংহ ও ল্যান্স নায়েক কুলদীপ সিংহ গুরুতর জখম হন। পরে হাসপাতালে তাঁদের মৃত্যু হয়। নিহত সেনারা ১২০ নম্বর ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডে মোতায়েন ছিলেন। বছর বত্রিশের মেজর অম্বাদাস মহারাষ্ট্রের ভান্ডারার বাসিন্দা। ল্যান্স নায়েক গুরমেল ও কুলদীপের বাড়ি পঞ্জাবের অমৃতসরে। পরগত সিংহ হরিয়ানার কারনালের বাসিন্দা। সেনার মতে, চলতি বছর স্নাইপার হামলায় সেনা ও বিএসএফের সাত জওয়ান নিহত হন। আজও ভারতীয় সেনার দলকে নির্দিষ্ট ভাবে নিশানা করেই হামলা চালানো হয়েছে। সামরিক পরিভাষায় যার নাম ‘টার্গেটেড কিলিং’।

২০১৬ সাল থেকেই জঙ্গি হামলার পাশাপাশি পাক বাহিনীর হামলায় উত্তপ্ত নিয়ন্ত্রণরেখা। তবে সেনা সূত্রের মতে, নৌশেরা সেক্টরে ছোটখাটো সংঘর্ষবিরতি হলেও প্রায় মাস খানেক পরে এত বড় হামলা চালাল পাকিস্তান। ১৬ নভেম্বর পুঞ্চের শাহপুর ও দেগওয়ারে বড় ধরনের মর্টার হামলা চালিয়েছিল পাক সেনা। ফলে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে গুলপুর ও নাকারকোট এলাকায় স্থানীয় স্কুল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ৩০০ বার সংঘর্ষবিরতি ভেঙেছে পাকিস্তান। তাতে সেনা ও স্থানীয় বাসিন্দা মিলে ১২ জন নিহত হয়েছেন।

পাক সেনাপ্রধান কমর বাজওয়া পাক সরকারকে জানান, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করা উচিত। সে জন্য পাক সেনা পাক সরকারকে সব রকম সাহায্য করতে তৈরি। তবে বিষয়টি নিয়ে গোড়া থেকেই সন্দিহান ছিল দিল্লি। সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত জানিয়ে দেন, জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসে যে ভাবে পাক সেনা এখনও মদত দিচ্ছে তা থেকে তাদের সদিচ্ছার পরিচয় মিলছে না। দিল্লির কর্তাদের মতে, আফগানিস্তানে তালিবান-বিরোধী লড়াই থেকে পাকিস্তানকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। কারণ সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের ভূমিকায় আমেরিকা মোটেই খুশি নয়। গতকাল কাবুল সফরের সময়ে পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খোদ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। মার্কিন আর্থিক সাহায্য নিয়ে কড়াকড়িতে নাভিশ্বাস ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে পাক সেনা ও আইএসআইয়ের। ফলে প্রকাশ্যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সদর্থক বার্তা দিচ্ছেন পাক সেনাপ্রধান। কিন্তু পাক সেনার মূল অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE