Advertisement
E-Paper

জেনেরিক নাম নিয়ে সুর বদলানোয় ধন্দ

গোটা বিষয়টাই যেন গোলকধাঁধা! প্রথম ধাঁধা: নতুন নির্দেশ জারি হয়ে গিয়েছে। প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম লোর সেই নির্দেশ না-মানলে শাস্তি হবে, দেওয়া হয়েছে এমন হুঁশিয়ারিও। কিন্তু কতটা কী শাস্তি হবে, সেটা আর বলা হয়নি।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০২:৫২

গোটা বিষয়টাই যেন গোলকধাঁধা!

প্রথম ধাঁধা: নতুন নির্দেশ জারি হয়ে গিয়েছে। প্রেসক্রিপশনে ওষুধের জেনেরিক নাম লোর সেই নির্দেশ না-মানলে শাস্তি হবে, দেওয়া হয়েছে এমন হুঁশিয়ারিও। কিন্তু কতটা কী শাস্তি হবে, সেটা আর বলা হয়নি।

দ্বিতীয় ধাঁধা: প্রথমে বলা হয়েছিল, প্রেসক্রিপশনে শুধু জেনেরিক নামেই ওষুধ লিখতে হবে চিকিৎসকদের। কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশের চাপে পড়ে এখন বেমালুম সুর পাল্টে বলা হচ্ছে, জেনেরিকের পাশাপাশি ব্র্যান্ড নামেও লেখা যাবে প্রেসক্রিপশন।

আসলে বিষয়টি নিয়ে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)-র অভ্যন্তরেই বেজায় টানাপড়েন চলছে। দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার ওই নিয়ন্ত্রক সংস্থার অন্দরে যে-ভাবে বিরোধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তাতে সেখানকার কর্তারাই বিভ্রান্ত। প্রশ্ন উঠছে, ব্র্যান্ড নেম যদি লেখাই যাবে, তা হলে জেনেরিক নামকে ঘিরে কড়াকড়ির এই উদ্যোগের মানে কী?

এপ্রিলে প্রেসক্রিপশনে জেনেরিক নামে ওষুধ লেখা বাধ্যতামূলক করে নির্দেশ জারি করে এমসিআই। কিন্তু তা না-মানলে ঠিক কী ধরনের শাস্তি হবে, সেটাই খোলসা করে জানায়নি তারা। এমসিআই সূত্রের খবর, মূলত কিছু সদস্য এবং পদাধিকারী চিকিৎসকের আপত্তিতেই শাস্তির সুস্পষ্ট বিধান দিতে পারেনি চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ফলে নির্দেশ না-মেনে প্রেসক্রিপশনে দেদার ব্র্যান্ড নাম লেখা চলছে। কারণ, শাস্তির কথা বলা নেই।

চিকিৎসকদের একাংশের প্রবল চাপেই প্রেসক্রিপশনে বাধ্যতামূলক ভাবে জেনেরিক নামে ওষুধ লেখার নির্দেশও কিছু শিথিল করেছে এমসিআই। ওই সংস্থার প্রধান জয়শ্রী বেন মেহতা বলছেন, ‘‘এখনও সব ওষুধ জেনেরিক নামে বাজারে মেলে না। তাই ডাক্তারবাবুরা আপাতত জেনেরিকের সঙ্গে সঙ্গে ওষুধের ব্র্যান্ড নামও লিখতে পারেন। তবে শর্ত হল, ওষুধের সেই নামের পাশে ব্র্যাকেটে কী কী জেনেরিক কম্পাউন্ড রয়েছে, সেগুলো লিখে দিতে হবে।’’

প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি চিকিৎসকদের ভয়েই শেষ পর্যন্ত এ ভাবে সুর বদল করতে হচ্ছে? ডাক্তারবাবুরা যদি দু’টিই লিখতে পারেন, তা হলে আর শাস্তির প্রয়োজন থাকছে কোথায়?

‘‘কেউ ব্র্যান্ড নাম লিখে পাশে তার জেনেরিক কম্পাউন্ডগুলি না-লিখলে শাস্তি পাবেন। এই ধরনের কোনও অভিযোগ এলে কী শাস্তি হবে, সেটা এমসিআইয়ের এথিক্যাল কমিটি ঠিক করবে,’’ বলেন জয়শ্রী।

কিন্তু এমসিআইয়ের অন্দরের খবর, শাস্তির বিষয়টি ঠিক করবেন যাঁরা, সেই এথিক্যাল কমিটির অধিকাংশ নেতাই এই নিয়মের বিরুদ্ধে। ‘‘ব্র্যান্ড নাম লেখাটা এমন কোনও গর্হিত অপরাধ নয় যে, চিকিৎসকদের গর্দান দিতে হবে,’’ বলেছেন এথিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান অজয়কুমার। এ ছাড়াও রয়েছে চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ-র প্রবল চাপ। এমসিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘এই বিরোধিতা ও চাপের মুখে জয়শ্রী বেন মেহতাকে জেনেরিক নামে ওষুধ লেখার নির্দেশ জারি করে আবার পিছিয়ে আসতে হচ্ছে।’’

তাই এমসিআই-এর নির্দেশের গতি কী হবে, তা নিয়ে চিকিৎসক, রোগী এবং ওষুধের দোকানের কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি এখন চরমে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy