পিতৃহারা: আরিফ খান
চোখে জমাট রক্ত। সারা শরীরে মারের চিহ্ন। সে দিনের কথা মনে পড়লে আট দিন পরেও শিউরে উঠছেন বছর ২২-এর আরিফ খান।
রবিবার দিল্লিতে এসেছেন হরিয়ানার দুধ ব্যবসায়ী পেহলু খানের ছোট ছেলে আরিফ। পেহলু খানকে গত শনিবারই পিটিয়ে খুন করেছে রাজস্থানের গো-রক্ষক বাহিনীর গুন্ডারা। সোমবার সিপিএমের কৃষক সভার নেতাদের সঙ্গে আরিফ যাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে, বিচার চাইতে। দাদাকেও সঙ্গে আনতেন। কিন্তু গো-রক্ষকদের মারে গুরুতর আহত দাদা ইরশাদ তো এখনও হাসপাতালে ভর্তি।
গরু-মোষ পুষে, দুধ বেচে সংসার চলে জয়সিংহপুর গ্রামের পেহলুদের। সামনেই রমজান। দুধের জোগান বাড়ানোর জন্যই দুই ছেলেকে নিয়ে পেহলু গিয়েছিলেন রাজস্থানের জয়পুরের হাটে, গরু কিনতে। আগেও গিয়েছেন। দু’জোড়া গরু কিনে ফেরার সময় অলওয়রে ৮ নম্বর জাতীয় সড়কে তাঁদের গাড়ি আটকায় ‘গো-রক্ষা বাহিনী’। গরু-পাচারের অভিযোগ তুলে শুরু হয় মারধর। গরু কেনার জন্য হাটের ছাড়পত্র, রসিদ দেখিয়েও লাভ হয়নি। আরিফের কথায়, ‘‘দু’টো গাড়িতে ফিরছিলাম। একটা গাড়ি চালাচ্ছিল ইরশাদ। আরেকটা ভাড়া গাড়ির চালক ছিল অর্জুন বলে একজন। হিন্দু বলে ওকে ছেড়ে দিল। আমাদের ঘিরে ধরে মারধর শুরু হয়। ‘মেরে জ্বালিয়ে দে’ বলে চিৎকার করছিল ওরা।’’
মার খেয়ে তিন জনেই অচেতন অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়েছিলেন। আরিফ বলেন, ‘‘ওরা ভেবেছিল, আমরা মরে গিয়েছি। তাই আমাদের রাস্তার ধারে ফেলে রেখেই চলে যায়।’’ পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই পেহলুর মৃত্যু হয়।
সদ্য কেনা দু’জোড়া গরু বাড়ি ফেরেনি। যেমন ফেরেননি পেহলু। শুধু কি তাই? গো-রক্ষক বাহিনীর গুন্ডারা তাঁদের টাকা-পয়সাও লুঠ করেছে বলে অভিযোগ। আরিফের বক্তব্য, দু’ভাইয়ের পকেটে ৭৫ হাজার টাকা নগদ ছিল। গুন্ডারা সেই টাকা এবং তিনটি মোবাইলও নিয়ে নেয়।
এখন ভাবনা, সুবিচার মিলবে কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy