Advertisement
E-Paper

ছাত্র বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করল গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভুল করল না গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়। একই পথে এগোল রাজ্যের বিজেপি সরকারও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৬ ০৩:২৪

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভুল করল না গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়। একই পথে এগোল রাজ্যের বিজেপি সরকারও। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম নিয়ে মুখ খোলায় ও তথ্য-অধিকার আইনে জবাব চাওয়ার ‘অপরাধে’ তিন ছাত্রকে বহিষ্কার করেছিল গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবাদে শুরু হয় আন্দোলন। তার আঁচ জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়েও পৌঁছয়। শেষ পর্যন্ত পিছু হঠে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়। তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে জারি বহিষ্কারের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসিত হলেও রাজনৈতিক মহল মনে করছে, কানহাইয়া-কাণ্ডে শিক্ষা নেওয়া বিজেপি ফের একই রাস্তায় এগোতে চায়নি। সে ক্ষেত্রে সম্ববত বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে শিক্ষামন্ত্রীরও হাত ছিল। ঘটনার সূত্রপাত মে মাসের শেষ সপ্তাহে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ আইন কলেজে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ছাত্রদের একাংশ সরব হয়। তাঁদের মধ্যে মিলটন সন্দিকৈ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নিয়ে শৌশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে লেখেন। ঋত্বিক শইকিয়া ও রেজাউল করিম নামে অন্য দু’জন টাকা খরচের হিসেব ও শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তথ্য-অধিকার আইনের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব চান।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেসিডেন্স, হেল্থ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন বোর্ড ৩০ মে তিন ছাত্রের হাতেই বহিষ্কারের নোটিস ধরায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় সন্দিকৈকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। শইকিয়া ও করিমকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটানোর অভিযোগে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। নির্দেশ পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্দিকৈ। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার প্রতিবাদে ৩১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদ মিছিল করেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিষ্কারের নির্দেশ ফের বিবেচনার আশ্বাস দেন। কিন্তু নির্দেশ প্রত্যাহার না হওয়ায় রেজাউল, ঋত্বিক এবং মিলটন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আমরণ অনশনে বসেন। তাঁদের সমর্থনে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রতিবাদ সভা করা হয়।

সম্প্রতি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় হাত পুড়েছিল কর্তৃপক্ষের। সমালোচনার মুখে পড়েছিল মোদী সরকারও। তাই, গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে সংবাদপত্র লেখালেখি শুরু হতেই সদ্য রাজ্যে ক্ষমতায় আসা বিজেপি জোট সরকার আসরে নামে। প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও, রাজ্য সরকারের তরফে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা যায়।

গত কাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্দোলনরত ছাত্রদের জানায়, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। উপাচার্য মৃদুল হাজরিকা জানান, ইতিমধ্যে তাঁদের কাছে ৫০ পাতার জবাব দেওয়া হয়েছে। বাকি তথ্য জানানোর জন্য আরও সময় চেয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের পর তিন ছাত্র অনশন ভাঙলেও জানিয়েছেন, অনিয়মের বিরুদ্ধে তাঁদের অরাজনৈতিক আন্দোলন চলবে। ছাত্রনেতা সুব্রত তালুকদার বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত ছাত্র আন্দোলনের বড় জয়। অবশ্য আমাদের প্রশ্নের সম্পূর্ণ জবাব না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। পরীক্ষার পরে ফের আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হবে।’’

Gauhati University expulsion order
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy