ছেলের সঙ্গে মেনকা গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
পুত্র বরুণের অবস্থা টলমল দেখেই তাঁর আসন সুলতানপুরে নিজে লড়বার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মেনকা গাঁধী। নিজের আসন পিলিভিট ছেড়ে দিয়েছিলেন বরুণকে। কিন্তু গত কাল ভোটের ফল বেরোনোর পরে দেখা গেল, কান ঘেঁষে কোনও রকমে জয় হাসিল করতে পেরেছেন মেনকা।
গাঁধী পরিবারের এই সদস্যার জয় সম্ভব হত না, যদি না ‘পরিত্রাতা’র ভূমিকা পালন করত কংগ্রেস!
উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর কেন্দ্রে মেনকা মোট ভোট পেয়েছেন ৪,৫৯,১৯৬। তাঁর অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলেন বিরোধী জোটের প্রার্থী সোনু সিংহ। যিনি দাঁড়িয়েছিলেন বহুজন সমাজ পার্টির টিকিটে। সুলতানপুর প্রচারে গিয়ে ‘বাহুবলী’ এই নেতার উদ্দেশেই নাম না-করে বরুণ বলেছিলেন, ‘‘আমি সঞ্জয় গাঁধীর ছেলে। এই লোকদের দিয়ে জুতো খোলাই।’’
কিন্তু বিএসপি প্রার্থীকে মেনকা হারাতে পারলেন মাত্র ১৪,৫২৬ ভোটে। সৌজন্যে কংগ্রেস। কারণ, সুলতানপুরের কংগ্রেস প্রার্থী সঞ্জয় সিংহ ভোট কেটেছেন ৪১ হাজারেরও বেশি। কাজেই কংগ্রেস যদি ভোট না-কাটত, হার নিশ্চিত ছিল মেনকার।
এই পরিস্থিতি শুধু সুলতানপুরের নয়। বদায়ূঁ, বান্দা, বারাবাঁকী, বস্তি, মেরঠ, প্রতাপগড়, রবার্টসগঞ্জ, সহারনপুর, সন্ত কবীরনগর, সীতাপুর, শ্রাবস্তীর মতো অনেক আসনেই বিজেপির জয়ের ব্যবধান কংগ্রেসের পাওয়া ভোটের থেকে ঢের কম। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, উত্তরপ্রদেশে এসপি-বিএসপি-র সঙ্গে যদি কংগ্রেসের জোট হত, তা হলে তাদের ভোট বিরোধী খাতেই যেত। তাতে বিপদে পড়ত বিজেপি।
এর ফলেই ফিরে আসছে নির্বাচনী প্রচারের সময়ে ওঠা প্রশ্নটাই— গো-বলয়ের সব থেকে বড় রাজ্যে কংগ্রেস কি সত্যিই ‘ভোট কাটুয়া দলের ভূমিকা পালন করল?
কংগ্রেসের সঙ্গে ‘ভোট কাটুয়া’ তকমাটি সেঁটে যাওয়ার নেপথ্যে অবশ্য খোদ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। কারণ, ভোটের প্রচারের সময়েই তিনি মুখ ফস্কে বলে ফেলেছিলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে আমাদের কৌশল, যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী, সেখানে জোর দিয়ে লড়া। আর বাকি কেন্দ্রে বিজেপির ভোট কাটা।’’ এর পরেই নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ থেকে বিজেপির ছোট-বড় নেতারা প্রচারে বলতে শুরু করেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস নিজেই কবুল করল, তারা ‘ভোট-কাটুয়া’ দল।’’
প্রিয়ঙ্কা বলতে চেয়েছিলেন, বিজেপির ভোটে থাবা বসিয়ে আসলে এসপি-বিএসপিকে পরোক্ষে সাহায্য করবে কংগ্রেস। দিল্লিতে কংগ্রেস আজও তেমন দাবি করছে। কিন্তু এখন সমাজবাদী পার্টির নেতারাই প্রশ্ন তুলছেন কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে। বলছেন, ‘‘গোটা উত্তরপ্রদেশে একমাত্র রায়বরেলী ছাড়া আর একটিও আসন জিততে পারেনি কংগ্রেস। তারা বিজেপির ভোট কাটবে, এমন ধারণা তৈরি করেছিল। কিন্তু এখন তো দেখা যাচ্ছে, তার ধারেকাছে না-গিয়ে কংগ্রেস আসলে এসপি-বিএসপিরই ভোটে থাবা বসিয়েছে। আমরা তো রাহুল গাঁধী-প্রিয়ঙ্কার মতো প্রচারের আলোও পাইনি। তাঁরা এত কিছু পেয়েই বা কী করলেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy