উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-কে তুলে দিয়ে উচ্চ শিক্ষা কমিশন গঠনের লক্ষ্যে খসড়া বিল এনেছে কেন্দ্র। কিন্তু ওই কমিশন স্বায়ত্তশাসনের পথে উল্টে আরও বাধা হয়ে হয়ে দাঁড়াবে বলেই অভিমত শিক্ষক মহলের। এতে শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়বে বলে মনে করছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনগুলি।
কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দাবি, উচ্চশিক্ষা কমিশন সংক্রান্ত নতুন খসড়া বিলটিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও ক্ষমতা দেওয়া হবে। অথচ, খসড়া বিল বলছে— কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার বিষয়টি আর কমিশনের হাতে থাকবে না। সেটি নিয়ন্ত্রণ করবে মন্ত্রক, বকলমে কেন্দ্র। বিলের ওই ধারাটি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ডুটা। বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, এক দিকে স্বায়ত্তশাসনের কথা বলা হয়েছে বিলে। অন্য দিকে অর্থ বরাদ্দের মতো বিষয়টি কেন্দ্র নিজের এক্তিয়ারে রেখে দিচ্ছে। দু’টি যুক্তি পরস্পরবিরোধী।
কেন্দ্রের পাল্টা যুক্তি— এ ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসন বলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও বেশি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। পড়ুয়া ভর্তি বা বিষয় নির্বাচনের স্বাধীনতাও পাবে প্রতিষ্ঠানগুলি। ইনস্পেক্টর রাজ বন্ধ হবে। শিক্ষার গুণগত মানের উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে জোর দেবে কমিশন। প্রয়োজনে নিম্ন মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার দায়িত্ব থাকবে কমিশনের হাতে।
কেন্দ্রের ওই যুক্তি মানছেন না ডুটা বা জহওরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এর আগেও দু’বার ইউজিসি বাতিল করার প্রস্তাব এনেছিল সরকার। কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি। এ ক্ষেত্রেও বিস্তারিত আলোচনা না করে, ইউজিসি-র খামতিগুলিকে সংশোধন না করে ওই পদক্ষেপ আদৌ যুক্তিযুক্ত নয়। তা ছাড়া আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রশ্নে কেন্দ্রের খবরদারির প্রশ্নটি নিয়ে এখন থেকেই সুর চড়ানোর পক্ষে বিজেপি-বিরোধী রাজ্যগুলি।
আরও পড়ুন: মোদীর সামনেই কাশ্মীর নিয়ে ফোঁস রাজনাথের
এই সব যুক্তি-পাল্টা যুক্তির মধ্যে সরকার তৃতীয় বারের মতো ইউজিসি-কে বাতিল করার যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তার সাফল্য নিয়ে সন্দিহান মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকই।