এয়ার মার্শাল বি এস ধানোয়া
রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার পক্ষে নরেন্দ্র মোদী সরকারের হয়ে সওয়াল করলেন বায়ুসেনা প্রধান। যুক্তি দিলেন, বায়ুসেনার সঙ্গে আলোচনা করেই সরকার ৩৬টি যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাফাল নির্মাতা ফরাসি সংস্থা দাসো-র সঙ্গে অনিল অম্বানীর সংস্থার চুক্তিতে সরকার বা বায়ুসেনার কোনও ভূমিকা নেই।
কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না। রাফাল নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে বিঁধতে নতুন অস্ত্র হাতে মাঠে নামলেন রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেস সভাপতি আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, যে অনিল অম্বানীর মাথায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার দেনার বোঝা তিনি কোনও যুদ্ধবিমান তৈরির অভিজ্ঞতা ছাড়াই রাফালের বরাত পান কী করে? এ বার এরিকসন সংস্থা অনিল অম্বানীর রিলায়্যান্স কমিউনিকেশনস বা আরকম-এর বিরুদ্ধে ৫৫০ কোটি টাকার পাওনা না মেটানোর অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। আরকমকে টাওয়ারের যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেছিল এরিকসন। তাদের আর্জি, আরকম-এর শীর্ষ কর্তারা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন সে জন্য শীর্ষ আদালত পদক্ষেপ করুক।
এর পরেই রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে টুইটারে বলেন, ‘‘মোদী দেশের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা বরাত কী ভাবে বিলি করেন! এক, ৪৫ হাজার কোটি টাকার দেনা শোধ না করা যাবে না। দুই, অন্য সংস্থার কাছে পাওনা থাকতে হবে যারা আপনার দেশ ছাড়া আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে যাবে। তিন, প্রধানমন্ত্রী আপনাকে ‘ভাই’ বলবেন কিন্তু অভিজ্ঞতা থাকবে না।’’
অনিলের সংস্থার অবশ্য যুক্তি, তারা পাওনা মেটাতে ৬০ দিনের সময় চেয়েছিল। কারণ আরকম-এর স্পেকট্রাম ও অন্যান্য পরিকাঠামো অনিলের দাদা মুকেশ অম্বানীর জিয়ো কিনবে বলে ঠিক হলেও টেলিযোগাযোগ দফতরের আপত্তিতে আটকে ছিল। এ দিন টেলিকম ডিসপিউটস সেটলমেন্ট অ্যান্ড অ্যাপেলেট ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের পরে আরকমের স্পেকট্রাম বিক্রিতে আর বাধা থাকছে না।
আজ বায়ুসেনা প্রধান এয়ার মার্শাল বি এস ধানোয়া অবশ্য সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন, দাসো কোন ভারতীয় সংস্থার সঙ্গে বোঝাপড়া করবে, তাতে বায়ুসেনা, সরকারের ভূমিকা ছিল না। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যাল-কে বরাত দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গাঁধী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছিলেন, হ্যাল-এর রাফাল তৈরির ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু হ্যাল-এর সদ্য অবসর নেওয়া চেয়ারম্যানের দাবি, তাঁদের ক্ষমতা ছিল। এ ক্ষেত্রেও সরকারের পাশেই দাঁড়িয়ে বায়ুসেনা প্রধান মনে করিয়ে দেন, সুখোই যুদ্ধবিমান পেতে তিন বছর দেরি হয়েছে। হালকা যুদ্ধবিমান তেজসকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিতে পাঁচ বছর, জাগুয়ার ঢেলে সাজানোর জন্য ছ’বছর, মিরাজ-এর ভোলবদল করতেও হ্যাল দু’বছর দেরি করেছে।
বায়ুসেনা প্রধানের দাবি, রাফাল ‘গেমচেঞ্জার’-এর কাজ করবে। বায়ুসেনার হাতে এলে উপমহাদেশে খেলাই ঘুরে যাবে। রাফালের জন্য বেশি দাম চোকানোর অভিযোগ নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘অস্ত্র, সেন্সর মিলিয়ে ভাল প্যাকেজ মিলেছে।’’ আগের চেয়ে বেশি দাম মেটানো হয়েছে বলেও তিনি মানতে নারাজ।
এয়ার মার্শাল ধানোয়া জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিমানের অভাব মেটাতে দুই স্কোয়াড্রন বা ৩৬টি রাফাল কেনাকে সরকারের ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ বলেও আখ্যা দেন। তাঁর দাবি, ‘‘বায়ুসেনার সঙ্গে সরকারের যথাযথ স্তরেই আলোচনা হয়েছে।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘ওঁকে নিজের গণ্ডির মধ্যে থেকেই কথা বলতে হয়। প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy