Advertisement
E-Paper

আদালতে পেশ ৬২৭ জনের তালিকা, গোপনই থাকবে নাম

মুখবন্ধ খাম। তাতে ৬২৭ জনের নাম। যাঁরা বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কালো টাকা গচ্ছিত রেখেছেন বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আজ নরেন্দ্র মোদী সরকার এই ৬২৭ জনের নাম আদালতে জমা দিলেও, আপাতত তাঁদের নাম গোপনই থাকছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১৯

মুখবন্ধ খাম। তাতে ৬২৭ জনের নাম। যাঁরা বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কালো টাকা গচ্ছিত রেখেছেন বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আজ নরেন্দ্র মোদী সরকার এই ৬২৭ জনের নাম আদালতে জমা দিলেও, আপাতত তাঁদের নাম গোপনই থাকছে।

গত কাল সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মালিকদের নাম আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিল। আজ কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী মুখবন্ধ খামে সেই তালিকা পেশের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, কালো টাকার রহস্য উদ্ধারে যে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন হয়েছে, তার চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানই শুধু এই খাম খুলতে পারবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তালিকা খতিয়ে দেখে সিট-কে নভেম্বর মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টকে রিপোর্ট দিতে হবে। আগামী মার্চের মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করতে বলা হয়েছে সিট-কে।

লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী বিদেশি ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকা উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে মোদী সরকারই সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মালিকদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে আদালতের নির্দেশ মেনে সিট গঠন করা হয়। আজ শীর্ষ আদালতে ওই ৬২৭ জনের তালিকা প্রকাশের পর কালো টাকা উদ্ধারের কাজ কি আদৌ নতুন দিশা পেল?

সিট-এর চেয়ারম্যান, প্রাক্তন বিচারপতি এম বি শাহর মতে, গত কয়েক দিনে সুপ্রিম কোর্টের ঘটনাপ্রবাহের আদৌ কোনও তাত্‌পর্য নেই। তিনি বলেন, “আমরা যেখানে ছিলাম, সেখানেই রয়েছি। কারণ জুন মাসেই এই তালিকা কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে আজ যে সব তথ্য জানানো হয়েছে, তা কিছুই সিট-এর অজানা নয়।” সময়ের মধ্যেই তিনি আদালতে রিপোর্ট পেশ করবেন বলেও শাহ জানান।

কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি ছিল, ফ্রান্স বা জার্মানির সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য মিলেছে। কিন্তু সেই চুক্তিতে আয়কর ফাঁকি প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত গোপনীয়তা বজায় রাখার শর্ত রয়েছে। শর্ত না মানলে ভবিষ্যতে তথ্য মিলবে না। নতুন কোনও রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করাও সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। কালো টাকার তথ্য আদানপ্রদানে গোপনীয়তা রক্ষার যে আন্তর্জাতিক নীতি রয়েছে, ভারত তা মেনে চলবে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লিকে একটি বহুপাক্ষিক চুক্তিতেও আবদ্ধ হতে হবে। আজই বার্লিনে সে ব্যাপারে একটি বৈঠক ছিল। কিন্তু ভারত সেখানে যায়নি। তার কোনও কারণও জানানো হয়নি সরকারি ভাবে। যদিও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুর বেঞ্চ আজ মুখবন্ধ খাম না খোলারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান আইনজীবী, অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি জানান, আজ আদালতে যে তথ্য পেশ করা হয়েছে তা ২০০৬ সালের। জেনিভায় এইচএসবিসি ব্যাঙ্ক থেকে এই তথ্য চুরি হয়ে যায়। তার পর সেই তথ্য পৌঁছয় ফ্রান্সে। ২০১১ সালে ফ্রান্সের থেকে নয়াদিল্লির হাতে এই তথ্য আসে। এ বিষয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে যে সব চিঠি আদানপ্রদান হয়েছিল, তার বিশদ তথ্য এবং কালো টাকা সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও আদালতে পেশ করা হয়েছে। তবে তাঁর যুক্তি, বিদেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকলেই যে তা কালো টাকা, তা বলা যায় না। কারণ ওই তালিকার অনেকেই বিদেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু এ জন্য তাঁরা করও জমা করেছেন। তবে সরকার কাউকেই বাঁচাতে চাইছে না বলেও যুক্তি দিয়েছেন রোহতগি।

কালো টাকা উদ্ধারের জন্য ২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেছিলেন রাম জেঠমলানী। তিনি কিন্তু সরকারকে কোনও কৃতিত্ব দিতে রাজি নন। তাঁর যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই সরকার আদালতে তথ্য দিতে বাধ্য হয়েছে। আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল আর্জি রেখেছেন, তিনি অতিরিক্ত তথ্য দেওয়ার জন্য তাঁকে আদালতে বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হোক। ৩ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হবে বলে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন।

black money list 627 a c holders confidential name bjp supreme court national news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy