উত্তরপ্রদেশের সাহারনপুরে যখন পণের ১০ লক্ষ টাকা দিতে না পারার জন্য এক বধূকে এইচআইভি সংক্রমিত সুচ ফোটানোর অভিযোগ ওঠে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে, তার ঠিক বিপরীত ছবি ধরা পড়ল এ দেশেরই অন্য একটি রাজ্যে। রাজস্থানে বিয়ের আসরেই পণের টাকা ফিরিয়ে দিলেন বর। সঙ্গে বললেন, ‘ওই টাকা আমি নিতে পারব না।’’ শুধু তা-ই নয়, কেন তাঁকে পণ দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও প্রতিবাদ জানান। যেখানে পণের জন্য অত্যাচার, এমনকি খুনও করা হচ্ছে বধূদের, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে জয়সলমেরের পরমবীর রাঠৌরের এই কাজ প্রশংসিত হচ্ছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কারালিয়া গ্রামের নিকিতা ভাটির সঙ্গে বিয়ে হয় পরমবীরের। তিনি নিজে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পরমবীর বলেন, ‘‘পাত্রীর বাড়ির লোকেরা যখন আমাকে টাকা প্রস্তাব দিলেন সরাসরি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি। ভাবতে অবাক লাগে, আমাদের সমাজে এখনও এই ধরনের রেওয়াজ রীতি প্রচলিত। বাবা-মাকেও জানিয়ে দিই যে, পণের টাকা নেওয়া যাবে না।’’
বরের বেশে ঘোড়ার পিঠে চেপে বিয়ে করতে এসেছিলেন পরমবীর। সকলে বিয়ের অনুষ্ঠানে মেতে উঠেছিলেন। ছাঁদনাতলায় পরমবীরকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রীতি-রেওয়াজ পালন করার সময় অতিথি অভ্যাগতেরা উপহার তুলে দিচ্ছিলেন পরমবীরের হাতে। তার পরই একটি বড় থালায় টাকার বান্ডিল সাজিয়ে লাল কাপড়ে ঢেকে জামাইবরণ করা হয়। তার পর সেই টাকা পরমবীরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু তখনই সকলকে অবাক করে দিয়ে পরমবীর জানান, এই উপহার তিনি নিতে পারবেন না।
পরমবীর বলেন, ‘‘আমি এক সিভিল সার্ভিস চাকরিপ্রার্থী। আমাদের মতো শিক্ষিতেরাই যদি এই সমাজের পরিবর্তন না আনতে পারে, তা হলে তা বৃথা। আমাদেরই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। মা-বাবাও আমার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিল। আমারও বোন আছে। এই প্রথা যদি বন্ধ করতে না পারি, তা হলে সমাজে বদল আসবে কী ভাবে?’’ তাঁর হবু বরের এই সিদ্ধান্ত খুশি নিকিতাও। তিনি স্নাতকোত্তরের পড়ুয়া।
ঠিক উল্টো ঘটনা দেখা গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশের সাহারনপুরে। পণের ১০ লক্ষ টাকা দিতে না পারায় এক বধূকে এইআইভি সংক্রমিত সুচ ফুটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। ওই বধূর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।