Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
National News

বাড়িতে বসে বর, বিয়ের অনুষ্ঠানে পাত্রের ভুমিকায় বোন! এই গ্রামে এটাই রীতি

বিয়ের অনুষ্ঠানে কনে এবং বরের বোন। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের অনুষ্ঠানে কনে এবং বরের বোন। ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সংস্থা
ছোট উদয়পুর (গুজরাত) শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ১৫:৩১
Share: Save:

‘যার বিয়ে তার হুঁশ নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই’। বাংলা এই প্রবাদই যেন সত্যি হয়ে উঠেছে গুজরাতের ছোট উদয়পুর জেলার তিন তিনটি গ্রামে। তবে ‘পাড়াপড়শি’র জায়গায় এখানে ঘুম ছুটে যায় পাত্রের বোনের। কারণ, এখানে বিয়ের আসর হাজিরই থাকে না বর। তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে পুরো বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন বরের বোন। আর বোন না থাকলে গ্রামের অবিবাহিত কোনও তরুণী। বছরের পর বছর ধরে এই রীতিই পালন করে আসছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের বিশ্বাস, এই রীতি না মানলে সংসার জীবনে নানা অশান্তি এবং বিপদের মুখে পড়তে হয়।

ছোট উদয়পুর জেলার সুরকেধা, সানন্দা, অম্বলের মতো আরও তিন-চারটি আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে বিয়ে মানেই এমন ‘বরহীন’ অনুষ্ঠান। গোটা বিয়ে পর্বে বরের কোনও ভূমিকাই নেই। তিনি শুধু শেরওয়ানি-পাগড়ি পরে হাতে তলোয়ার নিয়ে বরের বেশে বাড়িতে মায়ের সঙ্গে বসে থাকেন। বাকি বরযাত্রীদের নিয়ে যাওয়া থেকেবিয়ের অনুষ্ঠানের সিঁদুর দান কিংবা সাত পাক ঘোরা-সহ যাবতীয় বিয়ের আচার সেরে নববধূকে বাড়িতে নিয়ে আসেন বরের বোন বা পাড়ার কোনও তরুণী। ভুরিভোজ থেকে নাচ-গানের মতো বাকি অনুষ্ঠানেও কোনও খামিত থাকে না।

কেন? গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, এই রীতি না মানলে দাম্পত্য জীবন সুখের হয় না। সংসারে নেমে আসে নানা বিপদ, অশান্তি। হাতের কাছে উদাহরণও রয়েছে। কয়েক জন এই রীতি ভাঙারও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের সংসারে নিত্য কলহ থেকে বিবাহ-বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়িয়েছে, দাবি গ্রামবাসীদের। তাই আর ঝুঁকি নেননি অন্যরা। ফিরে এসেছেন আবার আদিকাল ধরে চলে আসা পুরনো রীতিই।

আরও পডু়ন: বিজেপিকে ভোট কেন? দলবল নিয়ে চড়াও হয়ে গ্রামবাসীদের হাতেই পাল্টা মার খেলেন তৃণমূল নেতা

আরও পডু়ন: ‘যৌথ পরিবারে স্বামীর মৃত্যুতে নির্যাতিতাকে খোরপোশ দিতে হবে ভাসুর, দেওরকেও’: সুপ্রিম কোর্ট

গ্রামের মক্কেলে-মাতব্বরাও এই রীতি মেনে চলার পক্ষেই সায় দিয়েছেন। সুরকেধার ‘মুখিয়া’ রামসিংহভাই রাঠোয়াবলেন, ‘‘বেশ কয়েক বার কিছু লোক এই নিয়ম ভঙ্গের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের জীবনে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে বা সংসার সুখের হয়নি অথবা অযাচিত ভাবে কোনও বিপদ নেমে এসেছে।’’

পুরোহিতদের বক্তব্য, ব্যতিক্রমী এই প্রথা আদিবাসীদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। স্মরণাতীত কাল থেকেই এই রীতি চলে আসছে। তবে একটা গল্পগাথা প্রচলিত আছে এই এলাকায়।এলাকার আদিবাসীদের বিশ্বাস, তাঁদের আরাধ্য দেবতা চিরকুমার ছিলেন। তাই পাত্রকে বিয়ের আসরে হাজির না করে এবং বাড়িতে রেখে দিয়ে এলে বিয়ে সুখের হয়। সেই আরাধ্য দেবতাকেই তাঁরা সম্মান জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gujarat Bride Groom Marriage Tribal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE