দেশের নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব নিলেন জ্ঞানেশ কুমার। ওই পদে মঙ্গলবার মেয়াদ শেষ হয়েছে রাজীব কুমারের। তিনি অবসর নেওয়ার পর জ্ঞানেশ নতুন দায়িত্ব পেলেন। যদিও এই পদে তাঁর নির্বাচন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। এই সংক্রান্ত এই মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার সেই শুনানি হওয়ার কথা। তার আগে সকালেই নতুন পদে দায়িত্ব নিলেন জ্ঞানেশ। ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা, তার দায়িত্বে থাকবেন তিনি।
২০২৯ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের পদে থাকবেন জ্ঞানেশ। এই সময়কালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও বিধানসভা ভোট হবে কেরল, পুদুচেরি এবং তামিলনাড়ুতে। এ ছাড়া ২০২৭ সালে দেশে রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে। তার পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন জ্ঞানেশ। ছোটবড় মিলিয়ে অন্তত দু’ডজন ভোটের দায়িত্ব থাকবে এই প্রাক্তন আমলার হাতে।
আরও পড়ুন:
কেরল ক্যাডারের প্রাক্তন আইএএস জ্ঞানেশ এর আগে অমিত শাহের অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে কাজ করেছেন। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষাধিকার লোপের যে বিল, সেটি তিনিই ড্রাফট করেছিলেন। কানপুর আইআইটি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক করেন জ্ঞানেশ। তার পর পরিবেশ সংক্রান্ত অর্থনীতি নিয়ে আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।
দেশে যে প্যানেল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে বাছাই করে, তার গঠন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই প্যানেলে এত দিন থাকতেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। কিন্তু এই নিয়ম বদলের একটি বিল পাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্যানেল থেকে প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে তৃতীয় সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক প্রতিনিধিকে, যাঁকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন। এই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল। তাঁর বক্তব্য, প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়ায় প্যানেলটি আর নিরপেক্ষ নেই। তিনি নিজে জ্ঞানেশের নিয়োগের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু বাকি দুই সদস্যের সমর্থন পেয়ে তিনি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হলেন। রাহুলের বক্তব্য, নির্বাচন প্যানেল নিরপেক্ষ না-হলে যাঁকে এই পদে নিয়োগ করা হচ্ছে, তিনিও নিরপেক্ষ থাকতে পারবেন না। এতে দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপরেই প্রশ্ন উঠবে।