গত কালই খবর মিলেছিল বাবার ডেরায় পোঁতা রয়েছে প্রচুর লাশ। দ্বিতীয় দিন তল্লাশিতে নেমেও চমক অপেক্ষা করছিল পুলিশ–গোয়েন্দাদের জন্য। এ বার মিলল ডেরার গোপন সুড়ঙ্গের খোঁজ। শুধু তা-ই নয়, বিস্ফোরক তৈরির কারখানা থেকে শুরু করে বিস্ফোরক বানানোর নানা ধরনের রাসায়নিক, কী নেই ডেরায়!
জোড়া ধর্ষণ কাণ্ডে সৌদা-প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহ জেলে যাওয়ার পর থেকেই ‘বাবা’-র ডেরায় তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। শনিবার তল্লাশিতে নেমে সিরসার ডেরায় একটি গোপন সুড়ঙ্গ ও সুড়ঙ্গপথের খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। যেটি ‘বাবা’-র কোয়ার্টার থেকে সোজা চলে গিয়েছে সাধ্বীনিবাস পর্যন্ত। ডেরার তিন তলাতেও একটি সুড়ঙ্গের খোঁজ মিলেছে। জনসংযোগ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সতীশ মেহরা জানান, ফাইবারের তৈরি ওই সুড়ঙ্গটি কাদায় ভর্তি। এ দিন সিল করে দেওয়া হয় বেআইনি বিস্ফোরক তৈরির কারখানা। একে-৪৭ বন্দুকের কার্তুজের একটি ফাঁকা বাক্সও মিলেছে।
আরও পড়ুন: বেআইনি ভাবে ডেরা থেকে লাশ পাচার হত হাসপাতালে!
২৮ অগস্ট জোড়া ধর্ষণ মামলায় গুরমিতকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের নির্দেশে ৭০০ একরের ডেরা চত্বরে শুক্রবার থেকে তল্লাশি শুরু করে রাজ্য পুলিশ এবং সরকারি নানা বিভাগের ১০টি দল। সঙ্গে ৪১ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী। হাজির ছিল রুরকি থেকে আসা ফরেন্সিক দলও। যার ভিডিও তুলছে ৬০টিরও বেশি ক্যামেরা। গোটা প্রক্রিয়াটির উপরেই কড়া নজর রেখেছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা বিচারক এ কে এস পওয়ার। মঙ্গলবারই এই মামলায় আদালতের কমিশনার হিসেবে পওয়ারকে নিযুক্ত করে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট।
ডেরায় তল্লাশির দ্বিতীয় দিনে পুলিশি টহল। শনিবার। ছবি:পিটিআই।
এর আগে প্রাথমিক তল্লাশিতে প্রচুর কন্ডোম, গর্ভনিরোধক বড়ি ও যৌন উত্তেজনা বর্ধক ওষুধ মিলেছিল গুরমিতের ডেরায়। শুক্রবার তল্লাশি চালিয়ে ডেরা চত্বরেই মিলেছে একটি ওবি ভ্যান ও নম্বর প্লেট-বিহীন একটি বিলাসবহুল গাড়ি। ঘরভর্তি ওষুধেরও সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। মিলেছে ১২০০টি নতুন নোটের পাশাপাশি বাতিল পাঁচশো-হাজারের ৭০০০টি নোটও। উদ্ধার হয়েছে ১৫০০ জোড়া জুতো, ৩ হাজারেরও বেশি ডিজাইনার জামাকাপড়। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অজস্র ল্যাপটপ, হার্ড ড্রাইভ।
আগেই অভিযোগ উঠেছিল, গুরমিতের ডেরায় পোঁতা রয়েছে আশ্রমের বহু কর্মীর লাশ। তাঁদের খুন করে আশ্রম চত্বরেই পুঁতে রাখা হয়েছে বলেই সন্দেহ পুলিশের। গত কাল থেকেই জেসিবি মেশিন এনে মাটি খোঁড়া শুরু করেছে পুলিশ। এ দিনও তল্লাশির সময়ে ডেরা সদর দফতরের বাইরে ছিল ৯টি ডগ স্কোয়াড, বম্ব স্কোয়াড, দমকল, অ্যাম্বুল্যান্সও।
আবার, গত ২৫ অগস্ট ‘বাবা’-র সাজা ঘোষণার দিনই পঞ্চকুলায় হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় এ দিন গ্রেফতার করা হয়েছে পঞ্চকুলা ডেরা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই কর্মীকে। তাঁদের মধ্যে একজন চমকৌর সিংহ, যিনি
পঞ্চকুলা ডেরা কেন্দ্রের প্রধানের দায়িত্ব সামলাতেন। দ্বিতীয় জন গুরমিতের ডান হাত দান সিংহ। তাঁকে শুক্রবার চণ্ডীগড় থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দু’জনের বিরুদ্ধেই ওই দিন হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে পুলিশ। পাশাপাশি পাটিয়ালা থেকে করমজিৎ সিংহ নামে পঞ্জাব পুলিশের এক কমান্ডোকেও আজ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাম রহিমের নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কাজ করতেন করমজিৎ। রাম রহিমকে নিয়ে পালানোর ফন্দিতে যুক্ত ছিলেন তিনিও। তিন জনকেই আজ আদালতে পেশ করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy