স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরে ভাষণে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, “যদি আজ অসমিয়া সমাজ নীরব থাকে, তবে আগামী ২০ বছরের মধ্যে কোনও এক অনুপ্রবেশকারী হবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা তুলবেন অসমিয়া সমাজের অচেনা কোনও চরিত্র। অনুপ্রবেশকারীর দল দখল করে নেবে কামাখ্যা পাহাড়, শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের জন্মস্থাল বটদ্রবা। তাই অসমের ভবিষ্যৎ বাঁচাতেই বিজেপির লড়াই চলবে।” নাম না করলেও হিমন্তের নিশানায় রাজ্যের বাংলাভাষী মুসলিমরা। যাঁদের চলতি কথায় ‘মিঁঞা’ নাম দেওয়া হয়েছে।
আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে মেরুকরণকে তাদের ঘোষিত হাতিয়ার করেই গদি রক্ষার যুদ্ধে নেমেছে বিজেপি। বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদ উড়িয়ে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সংখ্যালঘু এলাকায় অসমিয়াদের হাতে অস্ত্রের লাইসেন্স তুলে দেওয়ার পোর্টালও উদ্বোধন করেন হিমন্ত। আজ তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের ‘জমি-জেহাদ’-এর বিরুদ্ধে লড়ে সরকার সমস্ত দখল হওয়া জমি উদ্ধার করবে। ইতিমধ্যেই ১.২ লক্ষ বিঘা জমি মুক্ত করা হয়েছে। হিমন্তের অভিযোগ, “জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ইতিমধ্যেই নিম্ন ও মধ্য অসমের চেহারা বদলে দিয়েছে এবং এখন তা উজানি অসমকে নিশানা করছে। আগামী ১০ বছরে আমরা হারাব ‘জাতি, মাটি, ভেটি’ (ভিত্তি)। ১৫ বছরে ৮০% মন্ত্রী ‘ওদের’ মধ্যে থেকে হবে। ২০ বছরে মুখ্যমন্ত্রীও হবে ‘অনুপ্রবেশকারী’দের মধ্যে থেকে।” অসমবাসীদের তিনি সতর্ক করে বলেন, কেউ যেন ‘অজানা’ ব্যক্তিদের কাছে জমি বা সম্পত্তি বিক্রি না করেন, বাড়ি ভাড়া না দেন। কংগ্রেসের নাম না করে হিমন্ত বলেন, “অতীতের আপোস ও প্রশ্রয়ই বর্তমান সঙ্কটের জন্য দায়ী।” বিরোধীদের অভিযোগ, হিমন্ত অসমকে আদানি-অম্বানীদের হাতে তুলে দিতে চাইছেন। জবাবে আজ হিমন্ত বলেন, “রাজ্যের দ্রুত শিল্পায়ন বড় গোষ্ঠীগুলিকে লাভবান করার জন্য নয়, রাজ্যের যুবসমাজের দিকে লক্ষ্য রেখে করা হচ্ছে, যাতে তাঁরা নিজেদের রাজ্যেই যোগ্য বেতনে কাজ করতে পারেন।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)