Advertisement
০২ মে ২০২৪
Gyanvapi Masjid-Kashi Vishwanath Temple

জ্ঞানবাপীর চত্বরেই পুজো চালানো যাবে, মুসলিম পক্ষের আর্জি খারিজ করে রায় ইলাহাবাদ হাই কোর্টের

জ্ঞানবাপী মসজিদের তহখানায় পুজো, আরতি চালিয়ে যেতে পারবেন হিন্দুরা। সোমবার মুসলিম পক্ষের আর্জি খারিজ করে এমনটাই জানাল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৩৭
Share: Save:

বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের তহখানায় পুজো, আরতি চালিয়ে যেতে পারবেন হিন্দুরা। সোমবার মুসলিম পক্ষের আর্জি খারিজ করে এমনটাই জানাল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। এর আগে বারাণসী জেলা আদালত জ্ঞানবাপীর তহখানায় হিন্দুদের পুজো এবং আরতি করার অনুমতি দিয়েছিল। নিম্ন আদালতের সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় মুসলিম পক্ষ।

‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’-র তরফে নিম্ন আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আর্জি জানানো হয়। সোমবার বিচারপতি রোহিতরঞ্জন আগরওয়ালের একক বেঞ্চ জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরের দক্ষিণ দিকে ‘ব্যাসজি কা তহখানা’য় হিন্দুদের পুজো, আরতি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

এর আগে পূজার্চনায় স্থগিতাদেশ চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মুসলিম পক্ষ। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত। সম্প্রতি জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘সিল’ করা একটি তহখানায় হিন্দু ভক্তদের পুজো করার অনুমতি দিয়েছিল বারাণসীর জেলা আদালত। গত ১ ফেব্রুয়ারি জেলা বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেসের সেই নির্দেশকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানায় ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’। ঘটনাচক্রে, প্রায় একই সময় বারাণসী আদালতের নির্দেশ মেনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘ব্যাসজি কা তহখানা’-য় শুরু হয়ে যায় আরতি এবং পুজোপাঠ।

মসজিদ চত্বরের দক্ষিণ অংশের ‘ব্যাস কা তহখানা’-য় আরতি এবং পুজোয় আপত্তি জানিয়ে মসজিদ কমিটির তরফে হাই কোর্টে বলা হয়, ১৯৩৭ সালে জ্ঞানবাপী সংক্রান্ত বিবাদের রায় মুসলিমদের পক্ষেই গিয়েছিল, তাই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-কে দিয়ে নতুন করে সমীক্ষা করানো যায় না। ২০২২ সালে বারাণসী আদালতের নির্দেশে করা ‘অ্যাডভোকেট কমিশনার’-এর রিপোর্টকেও বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে মুসলিম পক্ষের তরফে দাবি করা হয়। এই মামলার দ্রুত শুনানি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টেও একটি পৃথক আবেদন জানায় তারা।

ইলাহাবাদ হাই কোর্টে মসজিদ কমিটির তরফে দাবি জানানো হয়, ১৯৯৩ সালের আগে জ্ঞানবাপী চত্বরের কোথাও পূজার্চনা বা আরতির কোনও প্রমাণ হিন্দুপক্ষ দিতে পারেনি। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে যে মামলা দায়ের করেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে ‘অ্যাডভোকেট কমিশনার’-এর তত্ত্বাবধানে মসজিদের অন্দরের ভিডিয়ো সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বারাণসীর নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর। সেই রিপোর্ট জমাও পড়েছিল আদালতে। কিন্তু সে সংক্রান্ত নির্দেশ ঘোষণার আগেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বারাণসী জেলা আদালতে জ্ঞানবাপী মামলা স্থানান্তরিত হয়।

এর পরে জেলা আদালতের নির্দেশে এএসআই ভার পায় বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার। তারই ভিত্তিতে ‘ব্যাস কা তহখানা’-য় আরতি এবং পূজার অনুমতি দেন জেলা আদালতের বিচারক বিশ্বেস। হিন্দু পক্ষের দাবি, ‘ব্যাস কা তহখানা’ দীর্ঘ দিন ধরে ‘ব্যাস’ পুরোহিত বংশের দখলে ছিল। তাঁরা এক সময় ওখানে বসবাসও করতেন। শৈলেন্দ্রকুমার পাঠক ব্যাস নামে ওই বংশের পুরোহিত আদালতে জানান, ১৯৯৩ সালের গোড়া পর্যন্ত তাঁরা ওখানে পুজো করেছেন। কিন্তু ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। ১৯৯৩ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মুলায়ম সিংহ যাদব তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তখন পুরোহিত ছিলেন সোমনাথ ব্যাস। শৈলেন্দ্র সোমনাথের উত্তরাধিকারী হিসাবে আবার পুজো করার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE