শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
পাড়া-প্রতিবেশীরা তাঁকে দেখলেই ফিসফিস শুরু করে দেন। বন্ধুমহলে তিনি ব্যঙ্গের শিকার। আর পরিবার? সমকামী জানার পর থেকে পরিবারও যেন তাঁর সঙ্গে আর সহজ ভাবে মিশতে পারে না।
মনে মনে ভেঙে পড়েছিলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই পড়ুয়াটি। ভরসা জোগালেন ‘আর্ট অব লিভিং’ খ্যাত রবিশঙ্কর। সোমবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘সমকামী হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি প্রবণতা। পরে যা বদলেও যেতে পারে।’’
আরও পড়ুন: ধর্মনিরপেক্ষতার মতো বড় মিথ্যা আর হয় না: আদিত্যনাথ
ত্রয়োদশ জওহরলাল নেহরু স্মারক বক্তৃতা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন রবিশঙ্কর। অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় তাঁর কাছে এক পড়ুয়া জানতে চান, সমকামী হওয়ার কারণে তাঁকে যে ভাবে সমাজে হেয় হতে হয়, তার থেকে নিস্তার পাবেন কী ভাবে? জবাবে রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘আপনি যদি নিজের জায়গায় ঠিক থাকেন, তা হলে কে কী বললেন, তা শুনে মনের বোঝা বাড়িয়ে লাভ নেই। যদি মনে করেন, আপনি কোনও ভুল করছেন না, তা হলে মাথা উঁচু করে বাঁচুন। কারণ সমকামিতা খুবই স্বাভাবিক একটা প্রবণতা। এটা এখন আপনার প্রবণতা। এটাকে স্বীকৃতি দিয়ে মেনে নিন। নিজে মাথা উঁচু করে না চলতে পারলে, কারও কাছ থেকে প্রাপ্য সম্মানটুকু পাবেন না।’’
রবিশঙ্করের মতে, এক জনের যৌন চাহিদা কখনও সারাজীবন একই রকম নাও থাকতে পারেন। তাঁর দেখা এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা জীবনের অনেকগুলো বছর বিষমকামী হিসেবে কাটানোর পর সমকামী হয়েছেন। আবার উল্টোটাও সত্যি।
এর পরেই নাম না করে ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারকে দেশদ্রোহী তকমা দেওয়ার বিষয়টি রবি শঙ্করের সামনে তুলে আনেন আর এক পড়ুয়া। কিছু পড়ুয়ার জন্য জেএনইউয়ের সঙ্গে যে ভাবে দেশদ্রোহী তকমা জুড়ে গিয়েছে তা কী ভাবে দূর করা সম্ভব? রবি শঙ্করের কাছে জানতে চান পড়ুয়ারা। জবাব দেন রবি শঙ্কর। বলেন, ‘‘মতের বিরুদ্ধে যাওয়া মানেই দেশদ্রোহী নয়। মতের বিরুদ্ধে যাওয়া যৌবনের একটি প্রকৃতি। তেমন কেউ করে থাকলে তিনি দেশদ্রোহী নন। তবে কেউই নিজের দেশের বিরুদ্ধে যেতে পারে না, যদি কেউ গিয়ে থাকে তা হলে অবশ্যই তার কাউন্সেলিং দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy