শিক্ষক নিযুক্তির যোগ্যতা নির্ণায়ক (টেট) পরীক্ষায় পাশ করেও চাকরি মিলছে না— প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের অনশনে বসেছেন কর্মপ্রার্থীরা। ‘টেট কোয়ালিফায়েড আনপ্লয়েড কমিটি’র ব্যানারে গত কাল থেকে শিলচরে ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে তাঁদের অনশন চলছে।
আজ দুপুরে অনশনস্থলে দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁদের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কেউ তাদের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ দেখায়নি বলে অভিযোগ। কমিটির কোষাধ্যক্ষ আহসানুল হক লস্কর বলেন, ‘‘নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাতৃভাষা মাধ্যমে শিক্ষক নিযুক্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল দেড় বছর আগে। পাশ করে বসে থাকলেও সরকার নিযুক্তির ব্যবস্থা করছে না। বাধ্য হয়ে অনশন আন্দোলনে নামতে হয়েছে।’’ তিনি জানান, গত কাল সব জেলা সদরে প্রতীকী অনশন করা হয়। শুধু শিলচরেই আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করিমগঞ্জ-হাইলাকান্দি থেকেও টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা শিলচরে এসে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। অনশনকারীদের মধ্যে প্রচুর মহিলাও রয়েছেন। দু’দিন ধরে না খেয়ে এ দিন দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন মেহেরপুরের শিবু নাথ ও ধলাইর নীলোৎপল রায়। দু’জনই বর্তমানে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ না নেওয়ায় তাঁরা ক্ষোভ ব্যক্ত করেন।
অনশনস্থলে গিয়ে তাঁদের সমর্থন জানিয়ে এসেছেন শিলচরের বিধায়ক দিলীপকুমার পাল, পৃথক বরাক দাবি কমিটির শুভদীপ দত্ত, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা সমিতির সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী, এসইউসিআই নেতৃবৃন্দ। তাঁরা প্রশাসনের নীরবতায় ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক অসীমকুমার ভট্টাচার্য এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
অন্যদিকে দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকদের আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আজ কর্মবিরতি পালন করেন বরাক উপত্যকার কলেজ শিক্ষকরাও। তবে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংস্থা ভিন্ন সংগঠনের অনুমোদনপ্রাপ্ত বলে সেখানে পাঠদান হয়েছে।
সপ্তম বেতন পর্যালোচনা কমিটি গঠন-সহ ১০ দফা দাবিতে এ দিন আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল ‘অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অব ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজ টিচার্স অর্গানাইজেশনস’ (আইফাকটো)। তাকে সার্থক করে তুলতে উদ্যোগ নেয় ‘আসাম কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েসনের’ কাছাড় এবং করিমগঞ্জ-হাইলাকান্দি আঞ্চলিক কমিটিও। কাছাড় জোনের সভাপতি চন্দন পালচৌধুরী জানান, কলেজে উপস্থিত হয়েও তাঁরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। অধ্যক্ষদের আগেই এ ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বরাক উপত্যকার সবকটি কলেজেই এই আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হয়। আইফাকটো-র উপসভাপতি বিশ্বজিৎ ভুঁইঞা সে জন্য আসাম কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েসনের কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
দিল্লিতে আইফাকটোর কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়েছিলেন শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়মনীতির সমালোচনা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy