দিল্লি বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হুন্ডাই আই ২০ কেনা হয়েছিল হরিয়ানার এক গাড়ি বিক্রেতার থেকে। বিক্রি হয়েছিল এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকায়! সূত্রের খবর, গত ১১ বছরের এই গাড়ি মোট পাঁচ বার হাত বদল হয়েছিল।
দিল্লি বিস্ফোরণের পরই গোটা রহস্য ঘনীভূত হতে থাকে ওই আই ২০ গাড়িকে কেন্দ্র করে। কে এই গা়ড়ির মালিক, কার কাছ থেকে কে গাড়িটি কিনেছিলেন? উমর উন নবি, যিনি বিস্ফোরণের সময় ওই গাড়িতে ছিলেন, তিনি কী ভাবে পেলেন? এ হেন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল তদন্তকারীদের মনে। একটি সূত্র ধরে রহস্যের সেই জাল উন্মোচন অনেকটাই সম্ভব হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।
তদন্তকারীদের এক সূত্রের দাবি, গত ২৯ অক্টোবর হরিয়ানার আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রেখে গিয়েছিলেন মহম্মদ নামে ব্যক্তি। তবে তিনি ওই গাড়ির মালিক ছিলেন না। ২৯ অক্টোবরই গাড়িটি ওএলএক্সের মাধ্যমে এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকায় কিনেছিলেন জনৈক আমির। এই গাড়ি কিনতে সাহায্য করেছিলেন সোনু নামে এক জন গাড়ি ডিলার। তদন্তকারীরা তাঁকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। জানা গিয়েছে, এই গাড়ি কেনাবেচার জন্য ১০ হাজার টাকা কমিশন পেয়েছিলেন সোনু। শুধু তা-ই নয়, ওই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (আরসি) স্থানান্তরিত করার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। এক মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করতেও বলা হয়। কিন্তু তার আগেই বিস্ফোরণ হয় গাড়িটিকে। পুলওয়ামার এক ঠিকানার যাবতীয় নথি সোনুকে দেওয়া হয়েছিল গাড়ির রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তনের জন্য।
গাড়ির হাতবদল
সাদা রঙের ওই হুন্ডাই গাড়ির নম্বর HR 26 CE 7674। ২০১৩ সালে গাড়িটি তৈরি হয়। পরের বছরের ১৮ মার্চে নাদিম নামে জনৈক গুরুগ্রামের এক শোরুম থেকে কিনেছিলেন। তবে বেশি দিন গাড়িটি ব্যবহার করেননি নাদিম। ২০১৪ সালেই গুরুগ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ সলমন কাছে বিক্রি করে দেন। পরে তিনি নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করেন। বিস্ফোরণের পর সেই নথি ঘেঁটে সলমনকে আটক করে পুলিশ। সূত্রের খবর, সলমন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানান, গাড়িটি ওখলার বাসিন্দা দেবেন্দ্রের কাছে বিক্রি করেন। সেই সূত্র ধরে দেবেন্দ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তিনি জানান, গাড়িটি ফরিদাবাদের অমিত পটেলের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। তাঁর থেকেই গাড়িটি ২৯ অক্টোবর কেনেন আমির। তাঁর হাত থেকেই গাড়ি যায় মহম্মদের হাত। তিনিই আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পার্ক করে রাখেন। ওই গাড়িটির দূষণ শংসাপত্রের মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন:
গাড়িটি বার বার হাত বদল হলেও, তার মালিকানা খাতায়-কলমে পরিবর্তন হয়নি। সলমনের নামেই রেজিস্ট্রেশন ছিল। তাই বিস্ফোরণকাণ্ডের পরই তদন্তকারীদের নজরে চলে আসেন সলমন। তাঁকে জেরা করেই উঠে আসে একের পর এক তথ্য। খোলসা হয় গাড়ির হাতবদলের বিষয়টিও।