গোয়ায় বেড়াতে এসে রহস্যজনক ভাবে মারা গিয়েছিল ব্রিটিশ পর্যটক স্কারলেট এডেন কিলিং। মৃত্যুর আগে যৌন নির্যাতনেরও শিকার হয়েছিল বছর পনেরোর ওই কিশোরী। আট বছর আগের সেই ঘটনার মূল দুই অভিযুক্তকে শুক্রবার বেকসুর খালাস করে দিল গোয়ার এক আদালত। যা দেখে নিহত কিশোরীর মা স্পষ্ট জানালেন, ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় একেবারেই আস্থা নেই তাঁর। সিবিআইয়ের মতো গোয়েন্দা সংস্থাও দুর্নীতিগ্রস্ত। আজকের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চতর আদালতে আবেদন করবেন বলেও জানিয়েছেন।
২০০৮-এর ফেব্রুয়ারি। গোয়ার আনজুনা সৈকত থেকে উদ্ধার হয়েছিল স্কারলেট কিলিংয়ের অর্ধনগ্ন মৃতদেহ। স্কারলেটের মা ফিয়োনা ম্যাকোয়েন তখনই অভিযোগ করেন, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁর মেয়েকে। খুনের আগে ওই কিশোরীকে মদ আর মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন ফিয়োনা। তাঁর আরও বড়
অভিযোগ ছিল গোয়া পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনি জানিয়েছিলেন, স্কারলেটের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে বিষয়টি প্রথমে তারা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু ফিয়োনা নিজে গোয়ায় দীর্ঘদিন থেকে তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ের চেষ্টা চালান। শেষমেশ চাপে পড়ে তদন্তে নামে পুলিশ। পরে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ২০১০ সালে চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই।
বিষয়টি নিয়ে তখন প্রবল হইচইও হয়েছিল। গোয়ার মতো এলাকা যেখানে প্রায় সারা বছরই বিদেশি পর্যটকদের ভিড় থাকে, সেখানে এক কিশোরীর এই ধরনের মৃত্যুতে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তদন্তে নেমে স্যামসন ডি’সুজা এবং প্লাসিডো কারভালহো নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এঁরা সৈকতের ধারে ঝুপড়ি দোকান চালাতেন। এঁদের দু’জনের বিরুদ্ধেই অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ
এনেছিল পুলিশ। স্কারলেটকে মাদক সরবরাহ এবং তাঁকে মৃত্যুর মুখে ফেলে রেখে আসার অভিযোগ আনা হয়েছিল মূলত।
কিন্তু আজ ভরা আদালত কক্ষে দু’জনকেই বেকসুর খালাস করে দেন বিচারক বন্দনা তেন্ডুলকর। এই রায়ে বিস্মিত ফিয়োনা। তাঁর কথায়, ‘‘এই রায় সত্যিই আশা করিনি। এই রায়কে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ করব। তবে ভারতীয় বিচারব্যবস্থার উপর আর ভরসা রাখতে পারছি না। সিবিআইয়ের মতো সংস্থাকেও দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মনে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy