রাজস্থানের কোটায় একের পর এক পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল তাঁকেও। বন্ধুদের সঙ্গে এ সব ঘটনা নিয়ে প্রায়শই আলোচনা হত তাঁর। সেই সময় কথায় কথায় তাঁদের বলতেন, ‘এর পর আমার পালা’! যদিও তাঁর এই কথায় বন্ধুরা খুব একটা পাত্তা দিতেন না। মজাচ্ছলেই হয়তো এ সব কথা বলছেন বলে ধরে নিতেন তাঁরা। কিন্তু সেই কথাই যে বাস্তব হয়ে দাঁড়াবে সেটা ভাবতে পারেননি কেউই। বৃহস্পতিবার সেই কোটা শহর থেকেই নিট পড়ুয়া মনজোৎ সিংহের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। যে ঘটনা স্তম্ভিত করে দিয়েছে মনজোতের বন্ধুদেরও।
মনজোতের ঘর থেকে পুলিশ বেশ কয়েকটি হাতে লেখা নোটও উদ্ধার করেছে। তার মধ্যে একটিতে লেখা, “শুভ জন্মদিন বাবা।” আবার আরও একটিতে লেখা, “সরি।” তবে তাঁর এই চরম সিদ্ধান্তের জন্য কাউকেই দায়ী করেননি মনজোৎ। তাঁর মৃত্যুর পর যাতে কাউকে দায়ী না করা হয় সে বিষয়েও একটি নোট লিখে গিয়েছেন এই নিট পড়ুয়া। সেখানে লেখা, “আমি নিজের ইচ্ছাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার বন্ধুদের এ বিষয়ে কোনও হাত নেই। সুতরাং দয়া করে আমার বন্ধু এবং মা-বাবাকে সমস্যার মুখে ফেলবেন না।” এর পরই বাবাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি নোট লেখেন মনজোৎ। তার পর সবক’টি নোট নিজের ঘরের দেওয়ালে আটকে রেখেছিলেন।
মনজোতের বন্ধুরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁদের বন্ধু দুর্দান্ত ছাত্র ছিলেন। শুধু তাই-ই নয়, খুব হাসি-ঠাট্টা করতে ভালবাসতেন। প্রাঞ্জল ছেলে ছিলেন তিনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে কোটার পুলিশ আধিকারিক ধর্মবীর সিংহ জানিয়েছেন, মনজোতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি দ্বাদশ শ্রেণিতে ৯৩ শতাংশ পেয়েছিলেন। পড়াশোনায় অত্যন্ত ভাল ছিলেন। উত্তরপ্রদেশের রামপুরের বাসিন্দা মনজোৎ। মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। নিট পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গত এপ্রিলে কোটায় এসেছিলেন। সঙ্গে তাঁর তিন সহপাঠীও ছিলেন। তাঁরাও নিটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একসঙ্গেই তাঁরা হস্টেলে ছিলেন। বৃহস্পতিবার মনজোতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় হস্টেলের ঘর থেকে। পিছমোড়া করে হাত বাঁধা ছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ বছরে এখনও পর্যন্ত ১৯ জন পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছেন কোটায়। গত বছরে আত্মহত্যা করেছিলেন ১৫ জন পড়ুয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy