আগামী ন’মাসের মধ্যে অন্তত ছ’টি তেজস যুদ্ধবিমান ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে তুলে দেবে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (হ্যাল)। আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানগুলি ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে তুলে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার সংবাদসংস্থা পিটিআইকে এমনটাই জানিয়েছেন হ্যালের শীর্ষকর্তা। পাশাপাশি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিমানগুলি হস্তান্তর করতে না পারার নেপথ্য কারণও জানিয়েছেন তিনি।
অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমানের প্রস্তুতকারক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড। প্রথমে জানা গিয়েছিল, জুন মাসের শেষেই ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে প্রথম তেজস এমকে ওয়ান এ বিমানটি তুলে দেওয়া হতে পারে। সেইমতো পুরোদমে প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার হ্যালের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডিকে সুনীল জানিয়েছেন, বিমানের এফ৪০৪ ইঞ্জিন সরবরাহকারী মার্কিন সংস্থা ‘জিই অ্যারোস্পেস’-এর দেরির কারণেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানগুলি পৌঁছে দিতে দেরি হচ্ছে তাঁদের। এ জন্য জিই অ্যারোস্পেসকেই দায়ী করেছেন সুনীল। সুনীল বলেন, ‘‘আমাদের বিমান তৈরি রয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে ছ’টি বিমান রয়েছে। কিন্তু এখনও মার্কিন সংস্থা থেকে ইঞ্জিন সরবরাহ করা হয়নি। ২০২৩ সালে তাদের ইঞ্জিন পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু এত দিন পর্যন্ত আমাদের কাছে মাত্র একটি ইঞ্জিন এসে পৌঁছেছে।’’
সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিংহ তেজস এমকে ওয়ান এ যুদ্ধবিমান সরবরাহে দেরির বিষয়টি জনসমক্ষে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি যে কোনও দিনই বিমান আমাদের হাতে এসে পৌঁছোবে না, অথচ এটা জেনেও কখনও কখনও আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করি।’’ সেই ঘটনার উল্লেখ করে সুনীল পিটিআইকে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, অন্য সংস্থার গাফিলতির কারণেই এই দেরি। তবে চলতি অর্থবছরে জিই অ্যারোস্পেস-এর ১২টি ইঞ্জিন হ্যালকে সরবরাহ করার কথা রয়েছে। সুনীলের মতে, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যেই ওই ইঞ্জিনগুলি পেতে চলেছেন তাঁরা। সেগুলি পেলেই ছ’টি বিমান বায়ুসেনার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
তেজস একটি একক ইঞ্জিনযুক্ত, বহু কার্যক্ষমতাসম্পন্ন (মাল্টিরোল) যুদ্ধবিমান। আপাতত এক আধুনিকতম সংস্করণ তেজস এমকে ওয়ান-এ নাসিকে হ্যাল-এর কারখানায় তৈরি হচ্ছে। তেজসের এমকে ওয়ান-এর উন্নত সংস্করণ এই যুদ্ধবিমান। এই যুদ্ধবিমান আকাশ থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে ভূমি, দু’টি ক্ষেত্রেই হামলা চালাতে দক্ষ। ফলে মিগ ২১-এর মতো পুরনো যুদ্ধবিমানের জায়গায় এই বিমানকে কাজে লাগানো যেতে পারে।