E-Paper

খড়্গের মতো নেতারা চাইলেই সময় পাবেন না, সনিয়া ডাকলে তবেই সাড়়া দেবেন মমতা, বলছে দল

তৃণমূল শিবির এ কথাও বুঝিয়ে দিতে চাইছে, যে সব দল কংগ্রেসের বিভিন্ন রাজ্যে শরিক (ডিএমকে, এনসিপি, জেডিইউ), তাদের ব্যাপার স্বতন্ত্র। কিন্তু তৃণমূল বাংলায় ৪২টি আসনের সব ক’টিতেই একা লড়বে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:২৭
Sonia Gandhi and Mamata Banerjee

সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে মমতার সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের পুরনো। ফাইল চিত্র।

কংগ্রেসের ডাকা বিজেপি-বিরোধী কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া বা কথা বলার ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাদের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। সেই সঙ্গে এটাও ঠিক যে মল্লিকার্জুন খড়্গে অথবা কে সি বেণুগোপালের মতো নেতারা চাইলেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময় পাবেন না। তৃণমূলের শীর্ষ পর্যায়ের সূত্রের মতে, মমতা তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে এ কথা জানিয়েছেন যে এই নেতাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকে বসার প্রশ্নই উঠছে না। সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে মমতার সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের পুরনো। সনিয়া নিজে মমতার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তখন ভিন্ন কথা। আপাতত দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে খড়্গেরা যে ভাবে যোগাযোগ রাখছেন সেটাই চালু থাকবে। দিল্লিতে বৈঠক ডাকা হলে দল কোন সাংসদকে পাঠাবে তা নিয়ে বিবেচনা হবে। তবে আপাতত মমতার দিল্লি আসার কোনও কর্মসূচি নেই। তিনি রাজ্যের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।

রাহুল গান্ধীর সদস্যপদ খারিজ হওয়ার পর গত বাজেট অধিবেশনে দীর্ঘ দিনের ব্যবধানে কংগ্রেসের ডাকা বিরোধী দলের বৈঠকগুলিতে যেতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের সাংসদদের। তবে লোকসভা বা রাজ্যসভার নেতারা নন, বৈঠক এবং মিছিলে উপস্থিত থেকেছেন দুই সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জহর সরকার। আপাতত কংগ্রেসের সঙ্গে অতীতের ‘অ্যালার্জি’ কাটিয়ে একটা পর্যায়ে যোগাযোগ রেখেই চলা হচ্ছে।

তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্নামঞ্চ থেকেই ডাক দিয়েছিলেন, দিল্লিতে ছাত্র ও যুবদের নিয়ে বিজেপি বিরোধী সমাবেশ করার। একশো দিনের কাজ নিয়ে আমরা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে যে চিঠি দিয়ে এসেছিলাম, মন্ত্রী তার জবাব পর্যন্ত দিচ্ছেন না। এ সব নিয়ে আমাদের আন্দোলন দিল্লিতে চলবে। কিন্তু দলীয় আন্দোলন এক বিষয় আর মমতার দিল্লি এসে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বৈঠকে বসা ভিন্ন বিষয়।” তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে বিভিন্ন স্তরে।”

তৃণমূল শিবির এ কথাও বুঝিয়ে দিতে চাইছে, যে সব দল কংগ্রেসের বিভিন্ন রাজ্যে শরিক (ডিএমকে, এনসিপি, জেডিইউ), তাদের ব্যাপার স্বতন্ত্র। কিন্তু তৃণমূল বাংলায় ৪২টি আসনের সব ক’টিতেই একা লড়বে। ফলে জাতীয়স্তরে বিরোধী ঐক্যের প্রশ্নে কংগ্রেসের সঙ্গে কিছুটা থাকলেও, কংগ্রেসের সব কর্মসূচিতেই পা মেলানো সম্ভব হবে না। মমতাকে আহ্বান জানাতে হলে, সনিয়া গান্ধীকেই তা জানাতে হবে। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করেন, মল্লিকার্জুন খড়্গের মতো নেতাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব মমতার কাছাকাছিও নয়।

কংগ্রেস নেতৃত্বও জানেন যে তৃণমূলকে এক মঞ্চে আনার বিষয়টা অনেকটাই জটিল। কারণ, রাজ্যস্তরে সাগরদিঘি জয়ের পরে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের তিক্ততা বেড়েছে। রাহুল গান্ধী নিজে মেঘালয়ে গিয়ে তৃণমূলের দুর্নীতি ও হিংসার রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলেছেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে গোয়া-মেঘালয়ে কংগ্রেসের ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন রাহুল। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, এখনও কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলকে লক্ষ্য করে ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট এবং তারপর লোকসভায় তৃণমূলকে লড়তে হবে বিজেপি-কে রুখতে। ফলে কংগ্রেসের সব তালে তাল দেওয়া অথবা কে সি বেণুগোপালের মতো নেতারা ডাকলেই সর্বোচ্চ নেত্রীর হাজির হওয়া সম্ভব নয় বলেই খবর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

opposition alliance sonia gandhi Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy