বায়ুসেনা অফিসার নিনাদ মন্ধগানের মেয়ে নিয়া ও স্ত্রী বিজেতা। ছবি: সংগৃহীত।
শেষ বারের মতো বাবার কফিনে চুমু খেল দু’বছরের নিয়া। একরত্তি মেয়েটা বুঝতেও পারল না কী ভয়ানক ঘটনা ঘটে গিয়েছে তার জীবনে! শুক্রবারেই মহারাষ্ট্রের নাসিকে স্কোয়াড্রন লিডার নিনাদ মন্ধবগানের কফিনবন্দি দেহটা এসে পৌঁছেছিল। তেরঙ্গা জড়ানো স্বামীর কফিনটা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন বিজেতা।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বায়ুসেনার এমআই-১৭ চপার ভেঙে পড়েছিল জম্মু-কাশ্মীরের বদগামের গারেন্দ কালানে। সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ছয় বায়ুসেনা অফিসারের। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার নিনাদ মন্ধগানে।
শুক্রবারই নাসিকে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নিনাদের। স্বামীর শেষকৃত্য সেরে সোশ্যাল মিডিয়ার ‘যুদ্ধবাজ’দের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন বিজেতা মন্ধবগানে। পুলওয়ামা কাণ্ডের পর থেকেই দেশ জুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুদ্ধের জিগির তোলা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার সেই সব ‘যুদ্ধবাজ’দের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘যুদ্ধ যদি করতেই হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়াজ না তুলে আসল যুদ্ধক্ষেত্রে যান। তবেই বুঝতে পারবেন যুদ্ধ কতটা ভয়ঙ্কর!’
স্কোয়াড্রন লিডার নিনাদ মন্ধগানে।
আরও পড়ুন: ‘আর ৭৩ সিলেক্টেড’, পাক যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করার আগে এই বার্তাই দিয়েছিলেন অভিনন্দন
বিজেতা বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়া, টিভিতে অনেক কিছুই ঘটছে। অনেক সময় মিডিয়াও দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কাজ করছে। আমরা যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধের পরিণতি কী তা আপনারা জানেন না। আরও নিনাদের মৃত্যু হোক আমরা চাই না।” সোশ্যাল মিডিয়ার ‘যুদ্ধবাজদের’ উদ্দেশে তাঁর আরও বার্তা, “বন্ধ করুন এ সব। যুদ্ধ যদি করতেই চান, তা হলে ভার্চুয়াল যুদ্ধক্ষেত্রে না থেকে আসল যুদ্ধক্ষেত্রে যান।”
পাশাপাশি তিনি কয়েকটি পরামর্শও দিয়েছেন সেই সব যুদ্ধবাজদের। বলেন, “যদি সত্যিই পরিবর্তন চান, যুদ্ধের জিগির না তুলে দেশের পরিবর্তনের দিকে মনোনিবেশ করুন। তাও যদি না পারেন, হয় নিজে সেনাবাহিনীতে যান, না হলে পরিবারের কাউকে পাঠান। এখানেই থামেননি বিজেতা। তিনি আরও বলেন, “এটাও যদি না করতে পারেন তা হলে অন্তত নিজের আশপাশটা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন, খোলা জায়গায় মূত্রত্যাগ বন্ধ করুন, মহিলাদের হেনস্থা করা বন্ধ করুন।” বিজেতার এই পরামর্শই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
আরও পড়ুন: ভারতীয় ভেবে পাকিস্তানি পাইলটকেই পিটিয়ে খুন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে!
নাসিকের ভোঁসালা সেনা স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন নিনাদ। এর পর ঔরাঙ্গাবাদের সার্ভিসেস প্রিপারেটরি ইনস্টিটিউট থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক পাশ করেন। ২০০৯-এ বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার উইংয়ে যোগ দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy