ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে জেল থেকে দেশবাসীকে সাবধান করলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ভারত প্রতিশোধ নিতে পারে বলে জানালেন তিনি। কোনও অবস্থাতেই যাতে ভারতের প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিশ্বাস না করা হয়, সেই বার্তাও দিয়েছেন। জেলে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তাঁর বোন আলিমা খান। তাঁর মাধ্যমে সাবধানবাণী শুনিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। পরে ইমরানের এক্স হ্যান্ডলেও তাঁর বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও জেলবন্দি ইমরান সরাসরি এক্স হ্যান্ডলটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যন ডন ইমরানের বোনকে উদ্ধৃত করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বার্তা জানিয়েছে। ইমরান বলেছেন, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে সবসময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। পাকিস্তানকে এখন সতর্ক থাকতে হবে। কারণ মোদী অবশ্যই প্রতিশোধ নেবেন।’’ ইমরানের এক্স হ্যান্ডলের পোস্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘এই দেশ আমার, সেনাবাহিনীও আমার, আমি এ কথা সবসময় বলে এসেছি। আমাদের সেনা আকাশপথে এবং স্থলপথে মোদীকে পরাস্ত করেছে।’’ ইমরানের দাবি, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষকে নিশানা করেছিল ভারত। ভারতের হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘ভারতের কাপুরুষোচিত হামলায় পাকিস্তানের যে সমস্ত সাধারণ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা তাদের পাশে আছি। পাক বায়ুসেনা দুর্দান্ত কাজ করেছে।’’
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, পাকিস্তান প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ তাদের দেশের সাধারণ নাগরিকেরা প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষতি হয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের। ভারত অবশ্য সে সব দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানে অবস্থিত জঙ্গিঘাঁটিগুলি নিশানা করা হয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ। সেগুলিই ধ্বংস করা হয়েছে। ভারতের এই অভিযানের পাল্টা হিসাবে পাকিস্তান ঘোষণা করে ‘অপারেশন বুনিয়ান-আন-মারসুস’। জম্মু-কাশ্মীর-সহ পশ্চিম ভারতের সীমান্তবর্তী একাধিক এলাকায় তারা হামলা চালায়। ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাক গোলাগুলি রুখে দিয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়। সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান হিসাবে ৬ মে, মঙ্গলবার গভীর রাতে শুরু হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। তার পর বেশ কয়েক দিন সীমান্তে সংঘাত অব্যাহত ছিল। দুই তরফেই গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। শনিবার ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়। তার পরেও অবশ্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। তবে রবিবার থেকে মোটের উপর পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে। গত সোমবার দুই দেশের সামরিক বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস্ (ডিজিএমও)-এর মধ্যে ‘হটলাইনে’ কথাও হয়েছে। তার মাঝেই ভারতের প্রতিশোধের আশঙ্কা করছেন জেলবন্দি পাক নেতা ইমরান।